টলিউড সুপারস্টার জিতের অনুষ্ঠান ঘিরে কার্যত ধুন্ধুমার কাণ্ড ঘটে গেল বাঁকুড়ার ঐতিহাসিক বিষ্ণুপুর মেলায়। উপচে পড়া ভিড়, দর্শকদের ধাক্কাধাক্কি আর উন্মত্ত ভাঙচুরে শনিবার রাতে মেলার যদুভট্ট মঞ্চ এলাকা কার্যত রণক্ষেত্রের চেহারা নিল। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশকে হালকা লাঠিচার্জ করতে হয়, যা উত্তেজনাকে আরও বাড়িয়ে দেয়।
মুহূর্তে ধ্বংসস্তূপ অনুষ্ঠানস্থল:
২৩ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই জাতীয় মেলায় শনিবারের আকর্ষণ ছিল সুপারস্টার জিতের নাচ-গানের অনুষ্ঠান। রাত সাড়ে আটটা নাগাদ জিৎ মঞ্চে উঠতেই উন্মাদনা চরমে পৌঁছায়। বাঁকুড়া ও সংলগ্ন জেলাগুলি থেকে আসা হাজার হাজার মানুষের ভিড় সামাল দিতে হিমশিম খায় পুলিশ।
ভাঙচুর: ভিড়ের চাপে একসময় ভেঙে পড়ে মঞ্চের সামনের ব্যারিকেড। ক্ষুব্ধ দর্শকদের একাংশ প্রবীণ ও মহিলাদের জন্য রাখা কয়েক’শো চেয়ার ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয়।
লুটপাট ও তাণ্ডব: বিশৃঙ্খলার সুযোগ নিয়ে মেলার ধারের বেশ কিছু দোকানে ভাঙচুর ও লুটপাট চালানোর অভিযোগও উঠেছে। ছিঁড়ে ফেলা হয় ফ্লেক্স ও ব্যানার।
আতঙ্কে দর্শকরা, প্রশ্নের মুখে পুলিশ:
সেখানে উপস্থিত এক দর্শনার্থী ক্ষোভ উগরে দিয়ে বলেন, “কাল যা অবস্থা হয়েছিল, তাতে সুস্থভাবে বাড়ি ফিরব কি না সেই চিন্তায় ছিলাম। পুলিশ দাঁড়িয়ে দেখা ছাড়া আর কিছুই করছিল না।” ধাক্কাধাক্কিতে বেশ কয়েকজন দর্শনার্থী আহত হয়েছেন বলেও খবর। পুলিশ বেশ কয়েকজনকে আটক করলেও পরবর্তীতে ব্যক্তিগত বন্ডে ছেড়ে দেয়।
কী বলছেন উদ্যোক্তারা?
এত বড় বিশৃঙ্খলা ও ভাঙচুর চললেও মেলার উদ্যোক্তাদের দাবি, মূল অনুষ্ঠানে কোনও ব্যাঘাত ঘটেনি। জিৎ ও তাঁর সহ-শিল্পীরা নির্ধারিত সময় পর্যন্ত পারফর্ম করেছেন এবং সুস্থভাবেই মেলা প্রাঙ্গণ ত্যাগ করেছেন। তবে মেলার নিরাপত্তা ব্যবস্থা যে পুরোপুরি ভেঙে পড়েছিল, তা জাতীয় মেলা প্রাঙ্গণের ছড়ানো-ছিটানো ভাঙা চেয়ারের টুকরোগুলোই প্রমাণ দিচ্ছে।
বিষ্ণুপুরের এই ঘটনায় মেলার শেষ দিনগুলোর নিরাপত্তা নিয়ে বড়সড় প্রশ্নচিহ্ন তৈরি হলো।