শ্বশুরবাড়ির লোকজনের দ্বারা এক ব্যক্তিকে জীবন্ত কবর দেওয়ার চেষ্টার এক রোমহর্ষক ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে উত্তরপ্রদেশের বরেলীতে, যা হার মানাবে যেকোনো সিনেমার চিত্রনাট্যকেও। ভাগ্যক্রমে এক অপরিচিত ব্যক্তির আকস্মিক উপস্থিতিতে সব ফাঁড়া কাটিয়ে অক্ষত রয়েছেন রাজীব নামের ওই ব্যক্তি। ঘটনাটি ঘটেছে ইজ্জতনগর থানা এলাকায়।
অভিযোগ, রাজীবের স্ত্রী সাধনা নিজেই তার স্বামীকে হত্যার এই ভয়ানক ষড়যন্ত্র করেছিলেন। তিনি তার পাঁচ ভাই – ভগবান দাস, প্রেমরাজ, হরিশ এবং লক্ষ্মণকে রাজি করিয়েছিলেন এই হত্যাকাণ্ডের জন্য কিছু ভাড়াটে গুন্ডা নিয়োগ করতে।
২১ জুলাইয়ের ভয়াবহ রাত:
অভিযোগ অনুযায়ী, গত ২১ জুলাই রাতে মোট ১১ জন লোক রাজীবের বাড়িতে হামলা চালায়। তারা রাজীবের হাত এবং দুটি পা ভেঙে দেয়, যা থেকে বোঝা যায় তাদের উদ্দেশ্য কতটা নৃশংস ছিল। তাদের পরিকল্পনা ছিল রাজীবকে জীবন্ত কবর দেওয়া। এরপর তারা তাকে সিবি গঞ্জ এলাকার একটি জঙ্গলে নিয়ে যায় এবং কবর দেওয়ার জন্য একটি গর্ত খনন করে।
কিন্তু এখানেই ঘটে এক অলৌকিক ঘটনা। রাজীবকে কবর দেওয়ার ঠিক আগেই, একজন অপরিচিত ব্যক্তি ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। এই অপ্রত্যাশিত উপস্থিতি দেখে অভিযুক্তরা তাদের পরিকল্পনা ত্যাগ করে রাজীবকে ফেলেই পালিয়ে যায়।
অপরিচিতের সাহায্য ও হাসপাতালে ভর্তি:
যন্ত্রণায় কাতর রাজীবের হাড় ভেঙে গিয়েছিল এবং তিনি সাহায্যের জন্য চিৎকারটুকুও করতে পারছিলেন না। কিন্তু সেই অপরিচিত ব্যক্তিটি তাকে দেখতে পেয়ে অ্যাম্বুলেন্স ডাকেন এবং রাজীবকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করান। গুরুতর আহত অবস্থায় রাজীবের চিকিৎসা চলছে ওই হাসপাতালে।
রাজীবের বাবা নেত্রাম এই ঘটনায় তার পুত্রবধূ সাধনা এবং সাধনার ভাইদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন। তিনি অভিযোগ করেছেন যে, তারা তার ছেলেকে হত্যা করতে চেয়েছিল। তিনি আক্রমণকারীদের গ্রেফতার এবং তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
পারিবারিক বিবাদ ও কারণ অনুসন্ধানে পুলিশ:
রাজীব বরেলীর নবোদয় হাসপাতালে একজন ডাক্তারের ব্যক্তিগত সহকারী হিসেবে কাজ করেন। ২০০৯ সালে সাধনার সঙ্গে তার বিয়ে হয় এবং এই দম্পতির ১৪ বছর বয়সী যশ এবং ৮ বছর বয়সী লভ নামে দুটি সন্তান রয়েছে, যারা একটি বেসরকারি স্কুলে পড়ে। রাজীবের বাবা দাবি করেন, তাদের গ্রামে একটি বাড়ি থাকা সত্ত্বেও রাজীব শহরে বাড়ি ভাড়া নিয়েছিলেন, কারণ তার স্ত্রী সাধনা গ্রামে থাকতে চাইতেন না। কেন সাধনা স্বামীকে খুন করতে চেয়েছিল, সেই কারণ জানতে পুলিশ জেরা চালাচ্ছে এবং ঘটনার তদন্ত চলছে। এই ঘটনাটি বরেলীতে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে।