বলিউড চলচ্চিত্র ‘চেন্নাই এক্সপ্রেস’-এর একটি দৃশ্যের মতোই বাস্তবে এক অদ্ভুত ঘটনা ঘটছে উত্তরবঙ্গের জল্পেশ মন্দিরে যাওয়ার পথে। ভক্তরা ট্রেন থামানোর জন্য তিস্তা রেলসেতুতে ট্রেনের চেন টানছেন, কারণ সেখান থেকে মন্দিরটি কাছে। এই বিপজ্জনক প্রবণতা রোধ করতে রেলওয়ে পুলিশ (আরপিএফ) তিস্তা রেলসেতুতে নিরাপত্তা জোরদার করেছে। রবিবার এ ধরনের ঘটনায় তিন পুণ্যার্থীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
প্রতি বছর শ্রাবণ মাসে জল্পেশ মন্দিরে ব্যাপক ভক্ত সমাগম হয়। এ বছরও তার ব্যতিক্রম হয়নি। জলপাইগুড়ি ছাড়াও কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, দার্জিলিং, এমনকি পার্শ্ববর্তী রাজ্য আসাম ও বিহার থেকেও বহু পুণ্যার্থী এখানে আসেন। কোচবিহার এবং আলিপুরদুয়ার থেকে আসা অনেক ভক্ত ময়নাগুড়ি স্টেশনে নেমে অনেক দূর হেঁটে জল্পেশ মন্দিরে পৌঁছান।
গত বছর পর্যন্ত এই রুটেই ভক্তরা যাতায়াত করতেন। কিন্তু এ বছর এক নতুন প্রবণতা দেখা দিয়েছে। অনেক পুণ্যার্থী ময়নাগুড়ি পেরিয়ে যাওয়ার পর দোমহনির কাছে তিস্তা সেতুর উপর ট্রেন পৌঁছলে চেন টেনে ট্রেন থামিয়ে দিচ্ছেন। রেল পুলিশ গত দু’সপ্তাহ ধরে এই ঘটনা লক্ষ করছিল। এর পরিপ্রেক্ষিতে রবিবার তিস্তা সেতুতে পুলিশ মোতায়েন করা হয় এবং সেখানেই দীপঙ্কর সরকার, সম্রাট দাস এবং নন্দন সরকার নামে তিন পুণ্যার্থীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
জলপাইগুড়ি রোড স্টেশনের আরপিএফ ইনস্পেক্টর বিপ্লব দত্ত বলেন, “আগে কখনও এমন ঘটনা দেখিনি। গত দু’সপ্তাহ ধরে এই প্রবণতা বাড়ছে। এভাবে চেন টানা আইনত অপরাধ এবং এতে প্রাণহানির আশঙ্কা রয়েছে।” সোমবার থেকে এই রুটের তিস্তা-তোর্ষা এক্সপ্রেস এবং বঙ্গাইগাঁও-এনজেপি ইন্টারসিটি এক্সপ্রেসে আরপিএফ কর্মী মোতায়েন করা হয়েছে।
কয়েক দিন আগে বঙ্গাইগাঁও-এনজেপি ইন্টারসিটি এক্সপ্রেস প্রায় ৪৫ মিনিট তিস্তা সেতুর উপর দাঁড়িয়ে ছিল। রবিবারও একইভাবে তিস্তা-তোর্ষা এক্সপ্রেস দাঁড় করানো হয়েছিল। রেল কর্তৃপক্ষ এই ধরনের ঘটনাকে অত্যন্ত বিপজ্জনক বলে মনে করছেন এবং নিরাপত্তা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এই পদক্ষেপের উদ্দেশ্য হলো ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্ঘটনা এড়ানো এবং যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।