রাজ্যের বিএলআরও অফিসগুলোতে দুর্নীতি একটি নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এবার দক্ষিণ ২৪ পরগণার জয়নগর ১ নম্বর বিএলআরও অফিসে প্রকাশ্যে ঘুষ নেওয়ার একটি ভিডিও ভাইরাল হওয়ায় নতুন করে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, ঘুষ না দিলে কোনো কাজই হয় না।
ভাইরাল হওয়া ভিডিওটিতে দেখা যাচ্ছে, জয়নগর ১ নম্বর বিএলআরও অফিসের ক্লার্ক নীলরতন মণ্ডল একজন সাধারণ মানুষের কাছ থেকে প্রকাশ্যে টাকা নিচ্ছেন। এই ঘটনার পরেই তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে যে তিনি জমির রেকর্ড সংশোধন, নতুন রেকর্ড তৈরি এবং অন্যান্য কাজের জন্য অসহায় মানুষদের কাছ থেকে নিয়মিত ঘুষ নেন।
সাধারণ মানুষের অভিযোগ, এই অফিসগুলো জমির মাফিয়াদের সঙ্গে আঁতাত করে নকল দলিল ব্যবহার করে আসল জমির মালিকের নাম বাদ দিয়ে অন্যের নামে তা নথিভুক্ত করে দিচ্ছে। আর যখন আসল মালিকরা তাদের রেকর্ড ঠিক করতে আসছেন, তখন তাদের কাছ থেকে মোটা টাকা দাবি করা হচ্ছে।
ভিডিওটি সামনে আসার পর স্থানীয় সাংবাদিকরা যখন নীলরতন মণ্ডলকে এই বিষয়ে প্রশ্ন করেন, তখন তিনি প্রথমে হতভম্ব হয়ে যান এবং বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। পরে যখন তাকে ভিডিওটি দেখানো হয়, তখন তিনি চুপ হয়ে যান।
অবশ্য, নীলরতন মণ্ডল তার বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তার দাবি, দীর্ঘ দিন ধরে একজন ব্যক্তি একটি অবৈধ কাজ করাতে চাইছিলেন এবং তিনি তা করে না দেওয়ায় তার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করে এই ভিডিও বানানো হয়েছে। তিনি বলেন, “ভিডিওতে যে ৫০০ টাকার নোট নেওয়ার ছবি দেখা যাচ্ছে, তা আসলে একটি জমির তথ্য তোলার জন্য দেওয়া হয়েছিল। আমি সরকারি রেভিনিউ বাবদ ২০ টাকা রেখে বাকি ৪৮০ টাকা ফেরতও দিয়েছি, কিন্তু সেই ভিডিও তোলা হয়নি।” তিনি এই ঘটনার সঠিক তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।
তবে সাধারণ মানুষ এই যুক্তি মানতে নারাজ। তাদের দাবি, টাকা নেওয়ার পরেও তাদের কাজ হচ্ছে না। এই দুর্নীতির শেষ কোথায়, তা জানতে চায় সাধারণ মানুষ। এই ঘটনা রাজ্যের ভূমি সংস্কার দপ্তরের স্বচ্ছতা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলেছে।