চরম চিকিৎসাগত গাফিলতি এবং হাসপাতালের অব্যবস্থার কারণে লখনউতে এক ৭০ বছর বয়সী বৃদ্ধের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হতে এসে অক্সিজেন সিলিন্ডার যুক্ত একটি বেডের অভাবে সারা রাত ধরে বিভিন্ন হাসপাতালে ঘুরেছেন পরিবারের সদস্যরা। অবশেষে হাসপাতালের গেটেই কাতরাতে কাতরাতে প্রাণ হারান কাশী প্রসাদ গোস্বামী নামে ওই বৃদ্ধ। এই ঘটনায় লখনউ জুড়ে ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়েছে।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার বিকেলে কাশী প্রসাদ গোস্বামীর তীব্র শ্বাসকষ্ট শুরু হলে পরিবারের সদস্যরা তাকে লখনউয়ের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে প্রাথমিকভাবে চিকিৎসকরা অক্সিজেন দিয়ে তার অবস্থা কিছুটা স্থিতিশীল করতে সক্ষম হন। এরপর উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে কিং জর্জ মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটিতে (কেজিএমইউ) রেফার করা হয়।
দ্রুত বৃদ্ধকে ওই সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু পরিবারের দাবি, সেখানে বারবার অনুরোধ করা সত্ত্বেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ একটি বেড বা অক্সিজেন সিলিন্ডারের ব্যবস্থা করতে পারেননি। প্রায় চার ঘণ্টা ধরে তারা হাসপাতালের গেটে অপেক্ষা করছিলেন, কিন্তু কোনো চিকিৎসক তাকে দেখতে আসেননি। অসুস্থ বৃদ্ধকে স্ট্রেচারেই শুইয়ে রাখা হয়েছিল। হাসপাতালের কর্মীরা কেবল বারবার বলেছেন যে কোনো বেড খালি নেই। এমনকি, বৃদ্ধের অবস্থার দ্রুত অবনতি হলেও তাকে দেখার জন্য কেউ এগিয়ে আসেনি।
অবশেষে নিরুপায় হয়ে পরিবারের সদস্যরা আবার সেই বেসরকারি হাসপাতালেই ফিরে আসেন। সেখানে চিকিৎসা চলাকালীনই কাশী প্রসাদ গোস্বামী শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। পরিবারের পক্ষ থেকে দুটি হাসপাতালের বিরুদ্ধেই চিকিৎসা এবং কর্তব্যে চরম গাফিলতির অভিযোগ আনা হয়েছে।
এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে, সরকারি হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে, সেই মুহূর্তে কোনো ভেন্টিলেটর বেড খালি না থাকায় ওই বৃদ্ধকে ভর্তি নেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে, একটি অক্সিজেন সিলিন্ডার যুক্ত সাধারণ বেডের অভাবে একজন বৃদ্ধের হাসপাতালের গেটেই মৃত্যুর ঘটনাটি লখনউয়ের স্বাস্থ্য পরিষেবা ব্যবস্থার বেহাল দশার এক ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরেছে, যা নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও প্রশ্ন তৈরি হয়েছে।