প্যানেল বাতিলের পর এবার নতুন করে নিয়োগ পরীক্ষা নিয়ে বড় ধাক্কা খেলেন চাকরিহারাদের একাংশ। সুপ্রিম কোর্ট শুক্রবার জানিয়েছে, স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)-এর নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় সমস্ত পরীক্ষার্থীকে বয়সের ছাড় দেওয়া হবে না। এই বিষয়ে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ বহাল রাখল শীর্ষ আদালত।
গত এপ্রিল মাসে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ২০১৬ সালের এসএসসি-র প্যানেল বাতিল হয় এবং ২৫ হাজার ৭৫২ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মীর চাকরি বাতিল হয়ে যায়। এরপর সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে এসএসসি নতুন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি জারি করে। এই বিজ্ঞপ্তিতে দেওয়া শর্তাবলীর কিছু অংশে আপত্তি জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন চাকরিহারাদের একাংশ।
মামলাকারীদের মূল বক্তব্য ছিল, যেহেতু ২০১৬ সালের নিয়োগ বাতিল হয়েছে, তাই নতুন নিয়োগও ২০১৬ সালের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ীই হওয়া উচিত। ২০২৫ সালের নতুন নিয়ম অনুযায়ী ২০১৬ সালের নিয়োগ হতে পারে না। তারা নতুন বিজ্ঞপ্তিতে বয়সের ছাড়, শূন্যপদের সংখ্যা বৃদ্ধি এবং নম্বর বিভাজন নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। তাদের দাবি ছিল, নতুন বিজ্ঞপ্তিটি সম্পূর্ণ অবৈধ।
তবে হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ এবং পরবর্তীকালে বিচারপতি সৌমেন সেন এবং বিচারপতি স্মিতা দাসের ডিভিশন বেঞ্চও মামলাকারীদের আবেদন খারিজ করে দেয়। ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, দ্রুত শূন্যপদ পূরণ করাই এখন প্রধান লক্ষ্য, তাই নতুন বিজ্ঞপ্তিতে হস্তক্ষেপ করা হবে না।
হাইকোর্টের সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করেন মামলাকারীরা। শুক্রবার বিচারপতি সঞ্জয় কুমার এবং বিচারপতি সতীশ চন্দ্র শর্মার বেঞ্চ হাইকোর্টের নির্দেশ বহাল রেখে আবেদন খারিজ করে দেয়। শীর্ষ আদালত স্পষ্ট করে জানায়, সব চাকরিপ্রার্থীকে বয়সের ছাড় দেওয়া সম্ভব নয়। তবে তারা মানবিক কারণে বয়সের ছাড়ের ব্যতিক্রমী দিকটির কথাও উল্লেখ করে। ক্যান্সারে আক্রান্ত সোমা রায়ের চাকরি বহাল রাখার উদাহরণ টেনে দুই বিচারপতি বলেন, এমন বিশেষ পরিস্থিতিতে মানবিক কারণে বয়সের ছাড় দেওয়া যেতে পারে, তবে তা সবার জন্য প্রযোজ্য হবে না।
এই রায়ের ফলে নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে চলা আইনি জটিলতা শেষ হলো এবং এসএসসি-কে নতুন বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ীই নিয়োগ প্রক্রিয়া চালিয়ে যেতে কোনো বাধা রইল না।
