চাকরির পর শুরু আসল কাজ, শান্তনু বেরা-র উদ্যোগে সুন্দরবনের প্রাণীপালনে বিপ্লব

সুন্দরবনের প্রত্যন্ত অঞ্চলে প্রাণীপালনকে একটি নতুন মাত্রায় নিয়ে গিয়েছেন বিজ্ঞানী শান্তনু বেরা। তাঁর নিরলস প্রচেষ্টা এবং বিজ্ঞানের ব্যবহারিক প্রয়োগের স্বীকৃতিস্বরূপ তাঁকে সম্প্রতি ‘এক্সিলেন্ট আ্যওয়ার্ড’ প্রদান করা হয়েছে। এই পুরস্কার তাঁর কর্মজীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক।

মেধাবী ছাত্র শান্তনু বেরা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পাশের পর প্রাণীবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর এবং ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর তিনি পশ্চিমবঙ্গ প্রাণী ও মৎস্য বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাণী উৎপাদন ও প্রতিপালন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হিসেবে কাজে যোগ দেন। এই চাকরির মাধ্যমেই তিনি তার স্বপ্ন পূরণের সুযোগ পান। তিনি তাঁর পড়াশোনাকে বইয়ের পাতায় সীমাবদ্ধ না রেখে তা বাস্তবে প্রয়োগ করার জন্য গ্রামের মানুষদের সঙ্গে সরাসরি কাজ শুরু করেন।

তিনি তাঁর নিজের গ্রাম দক্ষিণ ২৪ পরগনার চন্দনপিড়িতে কাজ করছেন। সুন্দরিকা নদীর পাড়ে বসবাসকারী মানুষদের মধ্যে প্রাণী প্রতিপালন সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে তিনি নিয়মিত সভা করছেন। তাঁর এই প্রচেষ্টা অর্থনৈতিক ও সামাজিকভাবে পিছিয়ে পড়া মানুষদের জন্য অত্যন্ত উপকারী প্রমাণিত হয়েছে। তাঁর গবেষণার মূল লক্ষ্যই হলো মানুষের জীবনযাত্রা এবং অর্থনৈতিক উন্নয়ন।

শান্তনুবাবুর প্রায় ৫০টির মতো গবেষণাপত্র দেশ-বিদেশের জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে এবং তিনি বেশ কিছু বইও লিখেছেন। প্রাণী উৎপাদন এবং প্রতিপালন বিভাগে তাঁর অসামান্য সাফল্যের জন্য তিনি এর আগেও ‘টিচিং এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড’ এবং ‘ভারত গৌরব পুরস্কার’-এর মতো সম্মাননা পেয়েছেন। তাঁর এই নতুন পুরস্কার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “এই পুরস্কার আমাকে আরও ভালো কাজ করতে প্রেরণা দেবে।” শান্তনু বেরার এই কাজ নিঃসন্দেহে সুন্দরবনের প্রান্তিক এলাকার মানুষদের আত্মনির্ভরশীল হতে এবং অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হতে সাহায্য করবে।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy