ঘূর্ণিঝড় ‘দিতওয়া’-র তাণ্ডবে বর্তমানে লণ্ডভণ্ড দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কা। একদিকে প্রবল বর্ষণ, অন্যদিকে ভূমিধসে পরিস্থিতি ভয়াবহ। এই সংকটের মুহূর্তে প্রতিবেশী দেশ শ্রীলঙ্কার পাশে দাঁড়িয়েছে ভারত এবং শুরু করেছে ‘অপারেশন সাগর বন্ধু’। সেদেশের মানুষের জন্য ত্রাণ পাঠানো হচ্ছে এবং আটকে পড়া ভারতীয়দের উদ্ধারের কাজ শুরু হয়েছে।
রবিবার ভারতীয় হাই কমিশনের পদক্ষেপের পর সোমবার সকালে কলম্বো থেকে ভারতীয় বায়ুসেনার বিমান তিরুঅনন্তপুরমে এসে পৌঁছয়। প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের এক মুখপাত্র জানান, দিতওয়ার কবলে শ্রীলঙ্কায় আটকে পড়া অন্তত ৩০০ জনেরও বেশি ভারতীয় এদিন বায়ুসেনার বিমানে কেরলে ফিরেছেন।
ভারত সরকারের প্রতিরক্ষা মুখপাত্র জানিয়েছেন, এদিন সকালে বায়ুসেনার আইএল-৭৬ (IL-76) এবং সি-১৩০জে (C-130J) মালবাহক বিমানকে শ্রীলঙ্কায় পাঠানো হয়েছে। ওই বিমানে বিধ্বস্ত দ্বীপরাষ্ট্রে ত্রাণ ও জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী (NDRF) পাঠানো হয়েছে। এই বিমানে করেই শ্রীলঙ্কায় আটকে পড়া ভারতীয়দের তিরুঅনন্তপুরমে তুলে আনা হয়েছে।
তামিলনাড়ুতেও প্রভাব:
এদিকে, ‘দিতওয়া’-র প্রকোপ পড়েছে তামিলনাড়ু, পুদুচেরি-সহ অন্ধ্রপ্রদেশের উপকূলবর্তী এলাকায়। ভারী বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত জনজীবন। ভারতীয় মৌসম ভবন এই রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের কিছু এলাকায় কমলা ও লাল সতর্কতা জারি করেছে। তামিলনাড়ুতে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে এখনও পর্যন্ত তিনজনের মৃত্যুর খবর মিলেছে।
‘দিতওয়া’-র বর্তমান অবস্থান:
ভারতীয় মৌসম ভবনের তরফে জানানো হয়েছে, সোমবার সকাল ১০টা নাগাদ ‘দিতওয়া’ দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এবং তৎসংলগ্ন উত্তর তামিলনাড়ু-পুদুচেরি উপকূলবর্তী গভীর নিম্নচাপে রয়েছে।
এটি গত ৬ ঘণ্টা ধরে ১০ কিলোমিটার বেগে উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে চলেছে।
এই গভীর নিম্নচাপ চেন্নাই থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার পূর্ব-দক্ষিণ-পূর্বে, পুদুচেরি থেকে ১৩০ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে এবং নেল্লোর থেকে ২০০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ-পূর্বে কেন্দ্রীভূত ছিল।
দুর্বল হওয়ার পূর্বাভাস: মৌসম ভবন জানিয়েছে, আগামী ১২ ঘণ্টার মধ্যে এই গভীর নিম্নচাপ দুর্বল হয়ে নিম্নচাপে পরিণত হবে। এটি উত্তর তামিলনাড়ু-পুদুচেরি এবং দক্ষিণ অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূলের দিকে ধীরে ধীরে উত্তর দিকে অগ্রসর হবে।
উল্লেখ্য, দিতওয়ার কারণে বিধ্বস্ত শ্রীলঙ্কায় মৃতের সংখ্যা ক্রমশ বেড়েই চলেছে, ইতিমধ্যেই সেই সংখ্যাটা ১৫৩-এ দাঁড়িয়েছে।