ঘুষ নিতে গিয়ে হাতেহাতে ধরা পড়লেন DIG! বাড়িতে মিলল ৫ কোটি নগদ, সোনা, অডি-মার্সিডিজ ও ২২টি দামি ঘড়ি

চরম দুর্নীতি এবং বিপুল অবৈধ সম্পত্তির অভিযোগে পঞ্জাব পুলিশের ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল (ডিআইজি) হরচরণ সিং ভুল্লারকে গ্রেফতার করল সেন্ট্রাল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (সিবিআই)। রূপনগর রেঞ্জের এই উচ্চপদস্থ অফিসারকে ঘুষের টাকা নিতে গিয়ে বৃহস্পতিবার মোহালিতে তাঁর দফতর থেকে হাতেনাতে ধরে ফেলে কেন্দ্রীয় সংস্থা।

পরে ডিআইজি-র বিভিন্ন ঠিকানায় অভিযান চালিয়ে যা উদ্ধার হয়েছে, তা দেখে চক্ষু চড়কগাছ তদন্তকারীদের। উদ্ধার করা হয়েছে প্রায় ৫ কোটি টাকা নগদ, দেড় কেজি সোনা, ২২টি বিলাসবহুল ঘড়ি, মার্সিডিজ ও অডির চাবি এবং একাধিক আগ্নেয়াস্ত্র।

ঘুষ নিতে গিয়ে হাতেনাতে গ্রেফতার
সিবিআই সূত্রে খবর, স্ক্র্যাপ ব্যবসায়ী আকাশ বত্তা ডিআইজি ভুল্লারের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। আকাশ বত্তার অভিযোগ ছিল, ডিআইজি ভুল্লার এবং তাঁর ঘনিষ্ঠ সহযোগী কিরশনু একটি মামলা মিটিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতির বিনিময়ে নিয়মিত ঘুষ এবং মাসিক ‘সেবা-পানি’ দাবি করতেন। টাকা না দিলে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দেওয়া হতো।

নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে সিবিআই ফাঁদ পাতে।

হোয়াটসঅ্যাপ কল ফাঁস: সিবিআই জানিয়েছে, ১১ অক্টোবরের একটি রেকর্ড করা হোয়াটসঅ্যাপ কলে ডিআইজি ভুল্লারকে তাঁর সহযোগী কিরশনুকে ৮ লক্ষ টাকা সংগ্রহের নির্দেশ দিতে শোনা যায়।

হাতেনাতে ধরা: সেই তথ্যের ভিত্তিতেই বৃহস্পতিবার ব্যবসায়ীকে প্রথম কিস্তির ৫ লক্ষ টাকা দেওয়ার জন্য ডিআইজি-র অফিসে ডাকা হয়। সেখানেই অভিযান চালিয়ে ডিআইজি হরচরণ সিং ভুল্লার এবং তাঁর সহযোগী কিরশনুকে হাতেনাতে গ্রেফতার করে সিবিআই।

অবৈধ সম্পত্তির পাহাড়!
গ্রেফতারের পর সিবিআই ডিআইজি ভুল্লারের পঞ্জাব ও চণ্ডীগড়ের একাধিক ঠিকানায় তল্লাশি চালায়। যা উদ্ধার হয়েছে, তার তালিকা চমকে দেওয়ার মতো:

নগদ: প্রায় ৫ কোটি টাকা।

সোনা: ১.৫ কেজি।

বিলাসবহুল জিনিস: ২২টি উচ্চমূল্যের ঘড়ি, মার্সিডিজ ও অডির চাবি, একাধিক লকারের চাবি।

সম্পত্তি: ১৫টিরও বেশি সম্পত্তির নথি।

অন্যান্য: ৪০ লিটার আমদানিকৃত মদ এবং ডাবল ব্যারেল বন্দুক, রিভলভার, পিস্তল ও একটি এয়ারগান-সহ বিভিন্ন আগ্নেয়াস্ত্র।

এছাড়া, ডিআইজি-র সহযোগী কিরশনুর কাছ থেকেও ২১ লক্ষ টাকা নগদ উদ্ধার করা হয়েছে। দুই অভিযুক্তকেই শুক্রবার বিশেষ সিবিআই আদালতে তোলা হবে।

‘মাদকবিরোধী’ অফিসার, যাঁর পিতা ছিলেন DGP
২০০৭ ব্যাচের আইপিএস অফিসার হরচরণ সিং ভুল্লার পঞ্জাব পুলিশের অভ্যন্তরে ‘যুদ্ধ নশেয়ান বিরুদ্ধ’ (Yudh Nasheyan Virudh) নামক মাদকবিরোধী অভিযানে সক্রিয় ভূমিকার জন্য পরিচিত ছিলেন। তিনি নিজেই ছিলেন পঞ্জাবের প্রাক্তন ডিরেক্টর জেনারেল অব পুলিশ (DGP) মেহল সিং ভুল্লারের পুত্র।

তিনি সেই বিশেষ তদন্তকারী দলের (SIT) নেতৃত্বও দিয়েছিলেন, যারা আকালি নেতা বিক্রম সিং মজিঠিয়াকে মাদক পাচার মামলায় জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল। এমন একজন অফিসারের দুর্নীতিতে যুক্ত হওয়ার ঘটনা পঞ্জাব পুলিশের ভাবমূর্তিকে বড়সড়ো ধাক্কা দিল।

সিবিআই জানিয়েছে, তদন্তের নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে এই অভিযানে পঞ্জাব পুলিশের কোনও সদস্যকে যুক্ত করা হয়নি।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy