গ্রেটার বাংলাদেশ’ মানচিত্র বিতর্ক! ভারতের অংশ দাবি বাংলাদেশের সংগঠনের, এবার সংসদে জবাব দিল কেন্দ্র

বাংলাদেশের একটি ইসলামিক সংগঠন ‘সালতানাত-ই-বাংলা’ কর্তৃক ‘গ্রেটার বাংলাদেশ’-এর মানচিত্র প্রকাশ এবং তাতে ভারতের অংশকেও বাংলাদেশের বলে দাবি করার ঘটনা ঘিরে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। এই বিষয়টি এবার ভারতীয় সংসদেও উত্থাপিত হয়েছে এবং এর লিখিত জবাব দিয়েছেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। তিনি নিশ্চিত করেছেন যে সরকার এই পরিস্থিতির দিকে সতর্ক নজর রাখছে এবং দেশের জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করছে।

সংসদে প্রশ্ন ও বিদেশমন্ত্রীর জবাব:

কংগ্রেস নেতা রণদীপ সূরজেওয়ালা রাজ্যসভায় প্রশ্ন তুলেছিলেন যে, বাংলাদেশের ওই ধর্মীয় গ্রুপ ‘গ্রেটার বাংলাদেশ’-এর মানচিত্র প্রকাশ করেছিল এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তা দেখানো হয়। তিনি জানতে চেয়েছিলেন, ভারত সরকার কূটনৈতিক স্তরে এই বিষয়টি বাংলাদেশ সরকারের কাছে উত্থাপন করেছে কিনা এবং বাংলাদেশের সঙ্গে তুরস্ক ও পাকিস্তানের অতি-সখ্যতার পর ভারত সরকার নিরাপত্তা আরও বাড়িয়েছে কিনা।

এই প্রশ্নের উত্তরে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর জানান যে, ‘টার্কিশ ইয়ুথ ফেডারেশন’ নামক তুরস্কের একটি এনজিও-র সমর্থন রয়েছে ‘সালতানাত-ই-বাংলা’ নামক ওই ইসলামিক সংগঠনের পিছনে। তিনি বলেন, “তুরস্কের একটি এনজিও সমর্থিত সালতানাত-ই-বাংলা নামক একটি ইসলামিক গ্রুপ ঢাকায় গ্রেটার বাংলাদেশের ম্যাপ প্রকাশ করেছিল, যেখানে ভারতের অংশকেও বাংলাদেশের বলে দাবি করা হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এই ম্যাপ প্রদর্শিত হয়েছিল। সরকার এই বিষয়টির নোট নিয়েছে। সরকার পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছে। দেশের জাতীয় সুরক্ষা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করছে।”

বাংলাদেশের অবস্থান ও বিতর্ক:

কেন্দ্রের বিবৃতিতে বাংলাদেশের বক্তব্যও প্রকাশ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, “বাংলাদেশ ফ্যাক্ট চেকার প্ল্যাটফর্ম ‘বাংলা ফ্যাক্ট’ দাবি করেছে যে সালতানাত-ই-বাংলা যে বাংলাদেশ থেকে পরিচালিত, তার কোনো প্রমাণ নেই। ম্যাপে দেখানো মানচিত্র পূর্বের বাংলা সুলতানদের রাজত্বের প্রসঙ্গ হিসাবে দেখানো হয়েছিল।”

ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে যে, চলতি বছরের পয়লা বৈশাখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি প্রদর্শনীতে এই মানচিত্র প্রদর্শন করা হয়েছিল। প্রদর্শনীর উদ্যোক্তারা এর সঙ্গে বিদেশি কোনো সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানের যোগ নেই বলেই দাবি করেছে।

জাতীয় সুরক্ষার উদ্বেগ:

যদিও বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এটি ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে দেখানো হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে, তবুও ভারতীয় ভূখণ্ডকে নিজেদের মানচিত্রে অন্তর্ভুক্ত করার প্রচেষ্টা জাতীয় সুরক্ষার ক্ষেত্রে ভারতের জন্য উদ্বেগের কারণ। এই ধরনের উগ্র জাতীয়তাবাদী বা ইসলামিক সংগঠনের কার্যকলাপের ওপর ভারত সরকার নিবিড় নজর রাখছে এবং প্রয়োজনে কূটনৈতিক ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত সকল পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত রয়েছে। এই ঘটনা দু’দেশের সম্পর্কে সাময়িক উত্তেজনা তৈরি করলেও, ভারত সরকার সতর্কতার সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলা করছে।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy