আসন্ন ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে বাংলার রাজনৈতিক মঞ্চে আবারও উত্তাপ ছড়ালেন অভিনেতা ও বিজেপি নেতা মিঠুন চক্রবর্তী। শুক্রবার দুর্গাপুরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জনসভায় মাত্র ২-৩ মিনিটের এক সংক্ষিপ্ত, কিন্তু জ্বালাময়ী ভাষণে তিনি তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে সরাসরি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলেন, যা সভাস্থলে উপস্থিত জনতাকে প্রবলভাবে উদ্বেলিত করে তোলে।
মিঠুন তাঁর স্বভাবসুলভ ভঙ্গিমায় বলেন, “বুক চিতিয়ে মাঠে নামব। গুলি চালালে চালান। কিন্তু সামনে থেকে চালাবেন। পিছন থেকে নয়।” এই সাহসী বাক্যগুলি একদিকে যেমন বিজেপির কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে নতুন করে উদ্দীপনা তৈরি করেছে, তেমনি অন্যদিকে তৃণমূলের প্রতি তাঁর কঠোর মনোভাবকেও স্পষ্ট করেছে।
এদিন মিঠুনের ভাষণের মূল উদ্দেশ্য ছিল বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের আসন্ন ‘লড়াই’-এর জন্য প্রস্তুত করা। তিনি স্পষ্ট ভাষায় ঘোষণা করেন, “এটাই শেষ লড়াই। জীবন পণ করে লড়তে হবে। আর জিততে হবে। যে ভাবে হোক, জিততে হবে।” এরপর তিনি মাঠে নামার দিনক্ষণও জানিয়ে দেন, “২৩-২৪ (জুলাই) থেকে মাঠে নামব। আপনাদের সঙ্গে নিয়ে মাঠে নামব। তৈরি থাকুন।” এই ঘোষণা বিজেপির আসন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচির একটি ইঙ্গিত বলে মনে করা হচ্ছে।
দুর্নীতি ইস্যুতেও মিঠুন তৃণমূলকে তীব্র কটাক্ষ করেন। কিছুটা ব্যঙ্গের সুরেই তিনি বলেন, “কী বলব, কিছু বলার নেই। তৃণমূল কোনও ফাঁক রাখেনি। ভরপুর দুর্নীতি হয়েছে। কোনও ফাঁক নেই। মা-বোনের অবস্থা নিয়েও কথা বলার কোনও জায়গা নেই।” এই মন্তব্যগুলি রাজ্যের সাম্প্রতিক বিভিন্ন দুর্নীতি এবং নারীর সুরক্ষাহীনতার অভিযোগের প্রতি ইঙ্গিত করে।
তবে শুধু তৃণমূল নয়, এদিন মিঠুনের নিশানায় ছিল রাজ্য পুলিশও। পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে মিঠুন বলেন, “পুলিশকে নিরপেক্ষ হওয়ার কথা বলুন। পুলিশ নিরপেক্ষ হলে বিজেপি কী করতে পারে দেখিয়ে দেব।” এরপরই তিনি আবারও চ্যালেঞ্জের সুরে বলেন, “ময়দানে নামব। বুক চিতিয়ে নামব। গুলি চালালে চালান। কিন্তু সামনে থেকে চালাবেন। পিছন থেকে নয়।”
মিঠুন চক্রবর্তীর এই আক্রমণাত্মক বক্তব্য নিয়ে এখনও পর্যন্ত তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে, তাঁর এই ‘খোলা চ্যালেঞ্জ’ আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে বাংলার রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করবে বলে পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন।