উত্তর ২৪ পরগনা, হাবরা। শীতের মরশুম শুরু হতেই উত্তর ২৪ পরগনার হাবরায় এক অদ্ভুত দৃশ্য দেখা যাচ্ছে—একদল মানুষ ভোর থেকে গাছের গায়ে জন্মানো বিশেষ ছত্রাক সংগ্রহে ব্যস্ত। জানা গিয়েছে, এই ছত্রাকই প্রাকৃতিক উপায়ে তৈরি ভেষজ রঙের প্রধান উৎস। এই ধরনের পরিবেশবান্ধব রঙের চাহিদা এখন বিভিন্ন হস্তশিল্প ও পণ্যে তুঙ্গে।
দক্ষিণ ২৪ পরগনা থেকে আসা মুজাফর ও তাঁর সঙ্গীদের এই দলটি হাবরার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে শিশু গাছ বা শিরিশ গাছে জন্মানো ছত্রাক সংগ্রহ করছেন। স্থানীয় বাসিন্দারা প্রথমে এমন দৃশ্য দেখে কিছুটা অবাক হলেও, পরে জানতে পারেন যে এই ছত্রাক রঙ তৈরির জন্যই সংগ্রহ করা হচ্ছে।
ভেষজ রঙ তৈরির প্রক্রিয়া:
সংগ্রহকারীরা জানান, শিশু বা শিরিশ গাছের বাকলে বর্ষার পর যে ছত্রাক জন্মায়, তা প্রথমে ভালোভাবে শুকিয়ে নিতে হয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ছত্রাক সাধারণত সাদা, ধূসর বা হালকা বাদামি রঙের হয়। গাছের ক্ষতি না করে ছুরি বা বাঁশের টুকরো দিয়ে সকালে ভেজা অবস্থাতেই এটি সাবধানে তুলে নেওয়া হয়। এরপর ছত্রাকগুলিকে ছায়াযুক্ত জায়গায় ৩-৪ দিন শুকানো হয়, কারণ রোদে শুকালে রঙের গুণমান নষ্ট হতে পারে।
সংগৃহীত এই ছত্রাক কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রথমে দক্ষিণ ২৪ পরগনায় তা প্রক্রিয়াকরণ করা হয় এবং পরে রঙ তৈরির জন্য পুরুলিয়ায় পাঠানো হয়। এই পুরো প্রক্রিয়ায় তৈরি হয় যে ভেষজ রঙ, তা পরিবেশের জন্য নিরাপদ এবং ক্ষতিকর রাসায়নিক রঙের বিকল্প হিসেবে বাজারে যথেষ্ট জনপ্রিয়।