বাংলার রাজনীতিতে এই মুহূর্তে এক কঠিন লড়াইয়ের নাম মহম্মদ সেলিম। শূন্য থেকে দলকে টেনে তোলার গুরুভার এখন তাঁর কাঁধেই। কিন্তু রাজনীতির ময়দানে তুখোড় বক্তা হিসেবে পরিচিত এই নেতার ব্যক্তিজীবন এবং শিক্ষাগত যোগ্যতা সম্পর্কে অনেকেরই স্বচ্ছ ধারণা নেই। খিদিরপুরের এক সাধারণ পরিবার থেকে উঠে এসে কীভাবে তিনি আজ আলিমুদ্দিনের শীর্ষ পদে, তা কোনো সিনেমার গল্পের চেয়ে কম নয়।
খিদিরপুর থেকে যাদবপুর: এক মেধাবী যাত্রা খিদিরপুরের ‘হক পরিবার’-এর ৯ সন্তানের মধ্যে একজন মহম্মদ সেলিম। স্থানীয় সেন্ট বার্নাবাস স্কুল থেকে হাইস্কুলের পাঠ শেষ করেন তিনি। এরপর দর্শনের প্রতি টান থেকে ভর্তি হন কলকাতার বিখ্যাত মৌলানা আজাদ কলেজে। ঠিক জরুরি অবস্থার পরবর্তী সময়ে যখন ছাত্র রাজনীতি উত্তাল, তখনই কলেজ ইউনিয়নের জিএস নির্বাচিত হন তিনি। এরপর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। স্নাতক হওয়ার পর তিনি ভর্তি হন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগে। ১৯৮০ সালে যাদবপুর থেকে স্নাতকোত্তর (MA) ডিগ্রি লাভ করেন তিনি, যা তাঁর সর্বোচ্চ শিক্ষাগত যোগ্যতা।
ছাত্র রাজনীতি থেকে সংসদ: উত্থানের ইতিহাস যাদবপুরে পড়ার সময় নীলোৎপল বসু বা মানব মুখোপাধ্যায়ের মতো ভবিষ্যৎ বাম নেতাদের সঙ্গে তাঁর সখ্যতা তৈরি হয়। এসএফআই (SFI) থেকে শুরু করে ডিওয়াইএফআই (DYFI)-এর কলকাতা জেলা সভাপতির দায়িত্ব সামলেছেন দীর্ঘ ৬ বছর। ২০০১ সালে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের মন্ত্রিসভায় রাজ্যের মন্ত্রী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। দুইবার বিধায়ক এবং দুইবার সাংসদ হিসেবে তিনি দিল্লি ও কলকাতার সংসদীয় রাজনীতিতে নিজের দক্ষতার ছাপ রেখেছেন।
হলফনামায় দেওয়া আয়ের উৎস ও পরিবার ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে জমা দেওয়া হলফনামা অনুযায়ী, বর্তমানে প্রাক্তন সাংসদ হিসেবে পাওয়া পেনশনই মহম্মদ সেলিমের প্রধান আয়ের উৎস। রাজনৈতিক ব্যস্ততার মাঝেও তাঁর পারিবারিক ভিত্তি অত্যন্ত মজবুত। তাঁর স্ত্রী রোজিনা খাতুন পেশায় একজন চিকিৎসক এবং ওয়েস্ট বেঙ্গল হেলথ সার্ভিসের মেডিকেল অফিসার হিসেবে কর্মরত। বর্তমানে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক হিসেবে উত্তরবঙ্গ থেকে দক্ষিণবঙ্গ চষে বেড়াচ্ছেন সেলিম, যার মূল লক্ষ্য হারানো জমি পুনরুদ্ধার করা।