পশ্চিমবঙ্গে ভোটার তালিকার স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশন (SIR) প্রক্রিয়ায় ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ তুলে সরাসরি নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, কমিশন যদি ১ কোটি ৩৬ লক্ষ ‘সন্দেহভাজন’ ভোটারের তালিকা প্রকাশ না করে, তবে দিল্লিতে নির্বাচন কমিশনের সদর দপ্তর ঘেরাও করবে তৃণমূল।
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন প্রশ্ন তোলেন, গত ১৬ ডিসেম্বর খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশের দিনেই কীভাবে কমিশন ১ কোটি ৩৬ লক্ষ ভোটারের তথ্যে অসঙ্গতি খুঁজে পেল? তাঁর প্রশ্ন, “কোন জাদুকঠি বা কোন সফটওয়্যার ব্যবহার করে এক দিনে ৭ কোটি মানুষের নথি যাচাই করে এত বিপুল পরিমাণ নাম চিহ্নিত করা হলো? ক্লাসের রেজাল্ট বেরোল কিন্তু কারা ফেল করল তা জানানো হবে না, এটা হতে পারে না।” তৃণমূল সাংসদ দাবি তুলেছেন, যাঁদের নামের তালিকায় ‘লজিক্যাল ডিসক্রিপ্যান্সি’ বা তথ্যগত ভুল রয়েছে, তাঁদের নাম অবিলম্বে প্রকাশ্যে আনতে হবে।
এদিন পরিসংখ্যান তুলে ধরে অভিষেক দাবি করেন, বিজেপি রাজ্যে ১ কোটি অনুপ্রবেশকারী ও রোহিঙ্গার যে অভিযোগ তুলেছিল, SIR প্রক্রিয়ায় তার কোনো প্রমাণ মেলেনি। উল্টে তিনি দেখান যে, গুজরাত (৭৩ লক্ষ বাদ), উত্তরপ্রদেশ (৪ কোটি বাদ) বা তামিলনাড়ুর তুলনায় জনসংখ্যার শতাংশের নিরিখে বাংলায় সবথেকে কম (৫৮ লক্ষ ২০ হাজার) নাম বাদ গিয়েছে। তিনি প্রশ্ন তোলেন, অন্য রাজ্যগুলোতে SIR-এর সময়সীমা বাড়ানো হলেও বাংলার ক্ষেত্রে কেন বৈষম্য করা হচ্ছে?
অভিষেক হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, আগামী ৩১ ডিসেম্বর তিনি তৃণমূলের প্রতিনিধি দল নিয়ে দিল্লিতে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমারের সঙ্গে দেখা করবেন। সেখানে কমিশনকে তালিকা প্রকাশের জন্য নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দেওয়া হবে। তার মধ্যে সমাধান না মিললে দিল্লি স্তব্ধ করার হুমকি দিয়েছেন তিনি। তাঁর অভিযোগ, এটি অনুপ্রবেশকারী চেনার প্রক্রিয়া নয়, বরং বাংলার মানুষকে রাজনৈতিকভাবে হেনস্থা করার গভীর চক্রান্ত।