শেষের পথে ২০২৫। ক্যালেন্ডারের পাতা ওল্টানোর সময় এলেও এই বছরটি বিশ্ববাসীর স্মৃতিতে থেকে যাবে এক ভয়াবহ দুঃস্বপ্ন হিসেবে। জলবায়ু পরিবর্তন থেকে শুরু করে মানবসৃষ্ট বিপর্যয়—কোনওটিই বাদ যায়নি এই বছরে। তিব্বতের হাড়কাঁপানো শীতের ভূমিকম্প থেকে শুরু করে লস অ্যাঞ্জেলসের লেলিহান শিখা, ২০২৫ সালজুড়ে প্রকৃতি দেখিয়েছে তার রুদ্ররূপ। একনজরে দেখে নেওয়া যাক বছরভর বিশ্ব কাঁপানো সেই সব ঘটনা।
প্রকৃতির রোষ: তিব্বত, মায়ানমার ও আফগানিস্তান বছরের শুরুটাই হয়েছিল বিষাদ দিয়ে। ৭ জানুয়ারি তিব্বতে ভয়াবহ ভূমিকম্পে ১২৬ জনের প্রাণহানি ঘটে। কম্পন অনুভূত হয়েছিল কলকাতা ও বাংলাদেশেও। বছরের মাঝামাঝি সময়ে মায়ানমারে ৭.৭ মাত্রার ভূমিকম্পে ১,৬০০-র বেশি মানুষের মৃত্যু হয়, যা দেশটিকে কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত করে। ১ সেপ্টেম্বর আফগানিস্তানের কুনার প্রদেশেও ভূমিকম্প কেড়ে নেয় হাজারো প্রাণ।
আগুনের লেলিহান শিখা: লস অ্যাঞ্জেলস থেকে হংকং জানুয়ারিতে দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ার দাবানলে পুড়ে যায় শত শত ঘরবাড়ি। এরপর ২৭ নভেম্বর হংকংয়ের এক আবাসনে মেরামতির কাজের সময় লাগা আগুনে প্রায় ৩০০ জন দগ্ধ হয়ে প্রাণ হারান। পিছিয়ে ছিল না নর্থ ম্যাসিডোনিয়া ও ইরাকও; নাইটক্লাব এবং শপিং মলে অগ্নিকাণ্ডে প্রাণ হারান শতাধিক মানুষ।
আকাশ ও জলপথের বিপর্যয় ২৯ জানুয়ারি ওয়াশিংটনের পোটোম্যাক নদীর ওপর যাত্রীবাহী বিমান ও সেনা হেলিকপ্টারের সংঘর্ষে ৬৭ জনের মৃত্যু হয়। ২১ জুলাই বাংলাদেশেও প্রশিক্ষণরত যুদ্ধবিমান স্কুল ভবনে ভেঙে পড়লে ৩২ জন প্রাণ হারান। অন্যদিকে, কঙ্গো নদীতে নৌকায় আগুন লেগে মৃত্যু হয় ১৪৩ জনের।
রাজনীতি ও যুদ্ধের ময়দান দীর্ঘ ২ বছর রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের পর ২০২৫-এ ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় ইজরায়েল-হামাস শান্তি চুক্তির প্রথম পর্যায় স্বাক্ষরিত হওয়া ছিল বড় খবর। তবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ৩ বছর পেরিয়েও অমীমাংসিত রয়ে গেছে। প্রতিবেশী নেপালে ‘জেন জি’ আন্দোলনে পতন ঘটে ওলি সরকারের, যা দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতিতে এক বড় মোড়।
রক্তাক্ত সিডনি ও বালোচিস্তান মার্চ মাসে বালোচ জঙ্গিরা জাফর এক্সপ্রেস দখল করে ২১ জন যাত্রীকে হত্যা করে। বছরের শেষে ১৫ ডিসেম্বর সিডনির বন্ডি বিচে ইহুদি উৎসবে বন্দুকবাজের হামলায় ১৬ জনের মৃত্যু বিশ্বকে স্তম্ভিত করে দেয়।