বিহারের সমস্তিপুর জেলার ভোটার তালিকায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নামে আবেদনপত্র জমা পড়ায় ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। সম্প্রতি কুকুরের নামে আবাসিক শংসাপত্র দেওয়ার ঘটনার পর এটি আবারও বিহার প্রশাসনের ওপর প্রশ্ন তুলেছে। যদিও সমস্তিপুর জেলা প্রশাসনের সতর্কতায় এই ভুলটি এড়ানো সম্ভব হয়েছে।
জানা গেছে, গত ২৯শে জুলাই সমস্তিপুরের মহিউদ্দিননগর সার্কেল অফিসে একটি অনলাইন আবেদনপত্র জমা পড়েছিল, যেখানে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ছবি ব্যবহার করা হয়েছে। আবেদনপত্রে বাবার নাম ফ্রেডেরিক ক্রাইস্ট ট্রাম্প এবং মায়ের নাম মেরি অ্যান ম্যাকলিওড ট্রাম্প হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। ঠিকানা হিসেবে ওয়াশিংটন ডিসির হোয়াইট হাউসের বদলে দেওয়া হয়েছে সমস্তিপুরের পাটোরি মহকুমার হাসানপুর গ্রামের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের একটি ভুয়ো ঠিকানা। এছাড়াও একটি ভুয়ো মোবাইল নম্বর এবং ই-মেল আইডি ব্যবহার করা হয়েছে।
এই অদ্ভুত আবেদনপত্রটি দেখার পর মহিউদ্দিননগর ব্লক ডেভেলপমেন্ট অফিসার (বিডিও) নবকঞ্জ কুমার এবং সার্কেল অফিসার (সিও) ব্রজেশ কুমার দ্বিবেদী দ্রুত তদন্ত শুরু করেন। ৪ই আগস্ট তাঁরা আবেদনটি বাতিল করে দেন এবং এই ঘটনার নেপথ্যে থাকা ব্যক্তিকে খুঁজে বের করতে সাইবার থানায় একটি এফআইআর দায়ের করার সুপারিশ করেন।
আধিকারিকরা একটি যৌথ বিবৃতিতে জানিয়েছেন, “মনে হচ্ছে বিহারে চলমান ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন (SIR) প্রক্রিয়াকে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করার জন্যই এই ধরনের প্রচেষ্টা করা হচ্ছে।” তাঁরা এই ঘটনার কঠোর নিন্দা জানিয়েছেন এবং বলেছেন যে, দোষীদের কোনোভাবেই রেহাই দেওয়া হবে না।
এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক রণদীপ সিং সুরজেওয়ালা বিহারের ভোটার তালিকা সংশোধনের প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি এক্স-এ পোস্ট করে বলেন, “এটি সবচেয়ে বড় প্রমাণ যে বিহারে ভোটার তালিকা সংশোধনের পুরো প্রক্রিয়াটি একটি জাল এবং ভোট চুরির একটি পদ্ধতি।” তিনি আরও বলেন, নির্বাচন কমিশন কর্তৃক ৬৫ লক্ষেরও বেশি ভোটারের নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়া গণতন্ত্রের ওপর সরাসরি আক্রমণ।
সুরজেওয়ালার এই মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় নির্বাচন কমিশন সমস্তিপুর জেলা প্রশাসনের পোস্টগুলি তুলে ধরেছে। সমস্তিপুর জেলা প্রশাসনের এক্স এবং ফেসবুক পোস্টে বলা হয়েছে যে, এই সার্টিফিকেটটি জারি করা হয়নি এবং ইচ্ছাকৃতভাবে আবেদনটি ভুল তথ্য দিয়ে জমা দেওয়া হয়েছিল। এই বিষয়ে তদন্ত চলছে এবং প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।