বকেয়া মহার্ঘ ভাতা (DA) মামলার শুনানি চলাকালীন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি রাজ্য সরকারের আইনজীবীকে বলেন, ‘ওঁরা তো আপনাদেরই কর্মী! কোথাও পালিয়ে যাচ্ছেন না। রাজ্য সরকারকে বলুন, কিছু টাকা হলেও দিন।’ সর্বোচ্চ আদালতের এই মন্তব্যে সরকারি কর্মীদের মধ্যে এক মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। ‘কিছু টাকা হলেও মিটিয়ে দিন’— এই মন্তব্যে অনেকেই অপমানিত বোধ করছেন।
‘ভিক্ষা’ নয়, অধিকার
শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক কিংকর অধিকারী এই মন্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তাঁর মতে, ‘কিছু টাকা হলেও মিটিয়ে দিন’— এই কথাটি যেন ভিখারীকে কিছু দেওয়ার মতো শোনায়, যা সরকারি কর্মচারীদের সম্মানে আঘাত করে। তিনি বলেন, “আদালত অবমাননার মধ্য দিয়ে সর্বোচ্চ আদালতকে যে অসম্মান করা হয়েছে, তার জন্য দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক। বিচার ব্যবস্থার সম্মান যেন কোনোভাবেই ক্ষুণ্ন না হয়।” কিংকর অধিকারী আরও বলেন, কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে রাজ্য সরকার কর্মীদের অধিকার আটকে রেখেছে, যা প্রমাণ করে যে সরকার কর্মচারী-বিরোধী ভূমিকা পালন করছে।
ডিএ কি মৌলিক অধিকার?
মামলার শুনানির শুরুতেই সুপ্রিম কোর্ট প্রশ্ন তোলে যে ডিএ কি মৌলিক অধিকারের মধ্যে পড়ে? সর্বোচ্চ আদালত জানায়, এমন কোনো আইনি ভিত্তি পাওয়া যাচ্ছে না, যার আওতায় মহার্ঘ ভাতাকে মৌলিক অধিকার বলা যেতে পারে।
রাজ্যের আইনজীবী শ্যাম দিওয়ান বলেন, ডিএ কোনো আইনি অধিকার নয় এবং এটি রাজ্য সরকারের এখতিয়ারের মধ্যে পড়ে। তিনি আরও বলেন, রাজ্যের আর্থিক পরিস্থিতি এবং কোন বিষয়ে প্রাধান্য দেওয়া হবে, তার ওপর ভিত্তি করে ডিএ-র হার ঠিক করা হয়। রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা কেন্দ্রের হারে ডিএ দেওয়ার দাবি করতে পারেন না, কারণ কোনো আইনে তা বলা নেই। রাজ্যের অপর আইনজীবী কপিল সিব্বল জানান, দেশের ১৩টি রাজ্য কেন্দ্রের হার না মেনে নিজেদের আর্থিক পরিস্থিতি অনুযায়ী ডিএ নির্ধারণ করে। পশ্চিমবঙ্গ সরকারও তার সাধ্যমতো ডিএ দিচ্ছে, এমন নয় যে ডিএ দেওয়া হচ্ছে না।