দুর্গাপূজা শেষে এখন রাজ্যজুড়ে চলছে কালীপুজো ও দীপাবলির প্রস্তুতি। কিন্তু এই আলোর উৎসবের আগেই বড়সড় সমস্যায় পড়েছেন রাজ্যের মৃৎশিল্পীরা। ঘন ঘন নিম্নচাপ এবং অবিরাম বৃষ্টির কারণে নদিয়ার রানাঘাট, নবদ্বীপ, শান্তিপুর ও কৃষ্ণনগর অঞ্চলের মৃৎশিল্পীরা কার্যত নাকাল। মা কালী প্রতিমা তৈরির কাজ শেষ করতে না পারায় তাঁদের দুশ্চিন্তা বাড়ছে।
মাটি শুকোচ্ছে না, ধরছে ফাটল:
যেসব পরিবার বছরের পর বছর ধরে কালী প্রতিমা তৈরির সঙ্গে যুক্ত, তাঁদের কাজ প্রায় এক মাস আগে থেকেই শুরু হয়ে যায়। কিন্তু এই বছর লাগাতার বৃষ্টির কারণে প্রতিমা শুকোতে পারছেন না শিল্পীরা, মাটিও ঠিকভাবে শক্ত হচ্ছে না। ফলে কাজের গতি অনেকটাই কমে গিয়েছে।
রানাঘাটের এক প্রতিমা শিল্পী উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, “প্রতিমা তৈরি তো দূরের কথা, বৃষ্টি মাটি শুকোতে দিচ্ছে না। দিনের পর দিন ছাদ ঢাকা দিতে হচ্ছে। তবুও আর্দ্রতা থাকায় মাটির ফাটল ধরছে।” তাঁদের আশঙ্কা, অর্ডার থাকা সত্ত্বেও সময়মতো প্রতিমা পৌঁছে দেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে।
বিকল্প খুঁজছেন পুজো উদ্যোক্তারা:
প্রতিবছর কালীপুজোর সময় বিভিন্ন ক্লাব, বারোয়ারী ও বাড়ির পুজোর জন্য প্রচুর সংখ্যক প্রতিমার অর্ডার আসে। কিন্তু প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে এবার অনেকেই বিকল্প উপায় ভাবছেন। জানা যাচ্ছে, অনেক পুজো কমিটিই এবার মাটির প্রতিমার বদলে কাঠ বা ফাইবারের প্রতিমা নিচ্ছেন, আবার কেউ কেউ ছোট মাপের মাটির প্রতিমা ব্যবহারের দিকে ঝুঁকছেন।
স্থানীয় মৃৎশিল্পীরা অবশ্য বৃষ্টির মধ্যেই প্রতিমা শুকানোর জন্য অস্থায়ী ছাউনি ও শুকানোর জায়গা তৈরি করার উদ্যোগ নিয়েছেন। তবে তাঁদের আশঙ্কা, যদি আগামী কয়েকদিনের মধ্যে আবহাওয়া স্বাভাবিক না হয়, তাহলে কালীপুজোর বাজারে এই শিল্পে বড়সরের আর্থিক ক্ষতি হতে পারে। দ্রুত আকাশ পরিষ্কার হওয়ার দিকেই এখন তাকিয়ে আছেন নদিয়ার হাজার হাজার মৃৎশিল্পী পরিবার।