ভোটকুশলী থেকে জন সুরজ পার্টির নেতা হওয়া প্রশান্ত কিশোর (PK) এবার চরম বিপাকে। একই সঙ্গে দু’টি রাজ্যের ভোটার তালিকায় নাম থাকার গুরুতর অভিযোগে তাঁকে শোকজ করল নির্বাচন কমিশন। বিহারের করগাহর বিধানসভা কেন্দ্রের নির্বাচনী আধিকারিক এই নোটিশ জারি করেছেন।
এই নো-কৌশলী রাজনীতিকের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হলে জনপ্রতিনিধিত্ব আইন অনুসারে তাঁর এক বছরের কারাবাস অথবা জরিমানা হতে পারে!
কোথায় কোথায় রয়েছে PK-এর নাম?
নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইট এবং প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, জন সুরজ পার্টির নেতা প্রশান্ত কিশোরের নাম দু’টি ভিন্ন রাজ্যে পাওয়া গিয়েছে:
১. পশ্চিমবঙ্গ: কলকাতার ১২১ কালীঘাট রোডের ভোটার তালিকায় তাঁর নাম রয়েছে। এই ঠিকানার কাছেই তৃণমূল কংগ্রেসের কার্যালয় অবস্থিত। (উল্লেখ্য, একসময় তিনি তৃণমূলের ভোটকুশলী ছিলেন)। ২. বিহার: তাঁর পৈতৃক গ্রাম সাসারাম লোকসভা কেন্দ্রের কোনারের মধ্য বিদ্যালয় বুথের চূড়ান্ত ভোটার তালিকাতেও পিকে’র নাম রয়েছে। এটি বিহারের ২০৯ নম্বর করগহর বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত।
শোকজ ও চরম হুঁশিয়ারি
বিহারের স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশন (SIR) প্রক্রিয়া শেষ হয়ে যাওয়ার পর চূড়ান্ত তালিকায় এবং বাংলার খসড়া তালিকায় তাঁর নাম পাওয়ার পরেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়।
করগহর বিধানসভা কেন্দ্রের রিটার্নিং অফিসার প্রশান্ত কিশোরকে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, “২৮.১০.২০২৫ তারিখে সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত একটি রিপোর্ট অনুযায়ী আপনার নাম বিহার ও পশ্চিমবঙ্গের ভোটার তালিকায় রয়েছে।”
এই গুরুতর অভিযোগের বিষয়ে আগামী তিন দিনের মধ্যে তাঁকে উত্তর দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যদি তিনি সময়মতো উত্তর না দেন, তাহলে ১৯৫০ সালের জনপ্রতিনিধি আইন অনুসারে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে— যার মধ্যে এক বছরের কারাবাস বা জরিমানা রয়েছে।
এদিকে, এই ঘটনার একদিন আগেই মুখ্য নির্বাচনী কমিশনার জ্ঞানেশ কুমার SIR নিয়ে সাংবাদিকদের বলেছিলেন, কোনও ভোটার একবারের বদলে দু’টি এনুমারেশন ফর্মে স্বাক্ষর করে তা বিএলও’র কাছে জমা দিলে, দু’টি জায়গায় তাঁর নাম অন্তর্ভুক্ত হবে। তিনি বলেন, “একে অপরাধ বলে গণ্য করা হবে।”
রাজনৈতিক মহলের মতে, লোকসভা নির্বাচনের আগে প্রশান্ত কিশোরের বিরুদ্ধে এমন কঠোর পদক্ষেপ তাঁর জন সুরজ পার্টি ও সামগ্রিক রাজনৈতিক ভবিষ্যৎকে বড়সড় চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলল।