কালীঘাট মন্দিরের গর্ভগৃহে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটি আচরণ নিয়ে তীব্র বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বৃহস্পতিবার ‘এক্স’ বার্তায় দাবি করেছেন যে মুখ্যমন্ত্রী পুরোহিতের দেওয়া চরণামৃত বা প্রসাদ মুখে গ্রহণ করার পর সেটি আবার মায়ের দিকেই ছুঁড়ে দিয়েছেন, যা হিন্দু রীতি অনুযায়ী ‘অনাচার’। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে তিনি মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে হিন্দুদের বিশ্বাসে আঘাত করার অভিযোগ তুলেছেন।
কী অভিযোগ করলেন শুভেন্দু অধিকারী?
শুভেন্দু অধিকারী তাঁর এক্স বার্তায় সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে লিখেছেন, “মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আপনি এটা কী করছেন? কালীঘাট মন্দিরের গর্ভগৃহে পুরোহিত আপনাকে মা দক্ষিণা কালীর চরণামৃত বা প্রসাদ কিছু একটা দিয়েছেন, যা আপনি মাথায় ছোঁয়ালেন, মুখেও গ্রহণ করলেন, দিয়ে সেটাই আবার মা’এর দিকে ছুঁড়ে দিলেন?”
তিনি হিন্দু শাস্ত্রের রীতির উল্লেখ করে স্পষ্ট করে দেন যে:
প্রসাদ হোক বা চরণামৃত, মুখে গ্রহণ করার পর তা এঁটো হয়ে যায়।
এই এঁটো জিনিস মা’য়ের দিকে ছোঁড়া যায় না, এটি শাস্ত্র বিরোধী ‘অনাচার’।
শুভেন্দুবাবু আরও মনে করিয়ে দেন, কালীঘাট ৫১ সতীপীঠের মধ্যে অন্যতম পবিত্র শক্তিপীঠ, যার আধ্যাত্মিক মাহাত্ম্য অপরিসীম। গর্ভগৃহে মুখ্যমন্ত্রীর এই কাজকে তিনি “সরাসরি হিন্দুদের বিশ্বাস ও আস্থার উপর আঘাত” বলে দাবি করেছেন।
‘৩০ শতাংশ ভোটব্যাঙ্ক’ রক্ষার রাজনীতি?
শুভেন্দু অধিকারী মমতার এই কাজকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলেও কটাক্ষ করেছেন। তিনি অভিযোগ করেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তাঁর দল তৃণমূল নেতৃত্ব তাঁদের “৩০ শতাংশ ভোটব্যাঙ্ককে সুরক্ষিত করতে অত্যন্ত সচেতন ভাবেই বার বার হিন্দুদের বিশ্বাস ও আস্থায় আঘাত দিয়ে চলেছেন।”
এই প্রসঙ্গে তিনি পূর্বের একটি ঘটনা উল্লেখ করেন, যেখানে তৃণমূলেরই এক সাংসদ মা কালী সম্পর্কে কটূক্তি করেছিলেন।
“ফল ভোগ করতেই হবে”
নিজের আক্রমণের উপসংহারে বিরোধী দলনেতা বলেন, কালীঘাট মন্দিরে পূজিতা মা দক্ষিণা কালী অত্যন্ত জাগ্রত বলেই তাঁদের বিশ্বাস। তাই এই অনাচারের জন্য “নিশ্চিত ভাবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাপাধ্যায় আপনাকে এর ফল ভোগ করতেই হবে।”
তিনি মন্তব্যটি শেষ করেন এই কথা বলে: “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হিন্দু রীতি-নীতি’র বিষয়ে অজ্ঞতা আবারো প্রকাশ্যে এলো।”
মুখ্যমন্ত্রীর কালীঘাট মন্দিরের এই আচরণের ভিডিও বা স্থিরচিত্রের সত্যতা নিয়ে কোনো পক্ষ থেকে এখনো স্পষ্ট করে কিছু জানানো হয়নি। তবে শুভেন্দুর এই কড়া মন্তব্যের পর রাজনৈতিক মহলে নতুন করে চাপানউতোর শুরু হয়েছে।