হুগলির কানাইপুরে তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য পিন্টু চক্রবর্তী ওরফে মুন্না খুনের ঘটনায় চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ্যে এসেছে। পুলিশি তদন্তে জানা গেছে, জমি কেনাবেচা সংক্রান্ত বিবাদের জেরেই এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে এবং এর জন্য উত্তর ২৪ পরগণার বারাসাত ও শাসন থেকে ভাড়াটে খুনিদের নিয়োগ করা হয়েছিল। এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পিছনে রাজনৈতিক কোনো উদ্দেশ্য নেই বলেই প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত করেছে পুলিশ।
শ্রীরামপুরের সিপি অর্ণব বিশ্বাস আজ এক সাংবাদিক সম্মেলনে জানান, তদন্তে উঠে এসেছে যে কানাইপুরেরই বিশ্বনাথ দাস ওরফে বিশা তিন লাখ টাকার বিনিময়ে শাসনের বিশ্বজিৎ প্রামাণিক এবং বারাসাতের দীপক মণ্ডল নামে দুই ভাড়াটে খুনিকে নিযুক্ত করেছিল। হত্যার দু’দিন আগেই এই দু’জন বিশার বাড়িতে আসে এবং ঘটনাস্থল রেকি করে। হত্যাকাণ্ডের পর তারা কিছুটা হেঁটে যায় এবং এরপর একটি স্কুটারে করে তাদের স্টেশনে পৌঁছে দেওয়া হয়।
সিসিটিভি ও ফোন ট্র্যাক করে খুনিদের হদিশ:
পুলিশি তদন্তে সিসিটিভি ফুটেজ একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। ফুটেজে দেখা গেছে, আততায়ীরা ধারালো কাটারি দিয়ে মুন্না চক্রবর্তীকে নৃশংসভাবে কোপাচ্ছে এবং এরপর পালিয়ে যাচ্ছে। রেকির সময় আততায়ীরা ফোনে কথা বলছিল, যা দেখে পুলিশ ওই সময়ের ফোনের লোকেশন ট্র্যাক করে। ফোন বন্ধ থাকলেও পুলিশ ওই এলাকার অবস্থান জানতে পারে এবং সেই সূত্র ধরেই অভিযান চালিয়ে অভিযুক্তদের আটক করে।
প্রসঙ্গত, গত ৩০ জুলাই বুধবার সন্ধ্যায় কানাইপুর অটো স্ট্যান্ডে নিজের গ্যাসের অফিস থেকে বাড়ি ফেরার পথে পিন্টু চক্রবর্তীকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আক্রমণ করে দুষ্কৃতীরা। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুষ্কৃতীরা এলোপাথাড়ি কোপ মারে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে প্রথমে কানাইপুর হাসপাতালে এবং পরে কলকাতার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনার পর কানাইপুর ফাঁড়ির পুলিশ এবং উত্তরপাড়া থানা থেকে বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছয়।
ধৃতদের আগামীকাল, রবিবার শ্রীরামপুর আদালতে পেশ করা হবে। পুলিশ জানিয়েছে, এই হত্যাকাণ্ডের পিছনে আরও কেউ জড়িত আছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এই ঘটনা কানাইপুর অটো স্ট্যান্ড এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছিল এবং এবার পুলিশের দ্রুত তদন্ত ও তথ্য উন্মোচন স্থানীয়দের মধ্যে স্বস্তি ফিরিয়েছে।