কসবা কাণ্ডে নতুন মোড়, মূল অভিযুক্ত মনোজিতের ‘উত্থান’ নাকি তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতা প্রান্তিকের হাত ধরে!

কসবা গণধর্ষণ কাণ্ডকে কেন্দ্র করে রাজ্য রাজনীতি যখন উত্তপ্ত, ঠিক তখনই এই ঘটনায় এক চাঞ্চল্যকর নতুন মোড় সামনে এসেছে। অভিযোগ উঠেছে, এই গণধর্ষণ কাণ্ডের মূল অভিযুক্ত মনোজিত মিশ্রের উত্থান নাকি তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (TMCP) নেতা প্রান্তিক চক্রবর্তীর হাত ধরেই। আরও গুরুতর অভিযোগ, প্রান্তিকের সুপারিশেই নাকি মনোজিত টিএমসিপির লিগ্যাল সেলে চাকরি পেয়েছিলেন। এই নতুন তথ্য কসবা কাণ্ডের তদন্তে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।

প্রান্তিক-রাজন্যার বিতর্কিত অতীত এবং নতুন অভিযোগ

প্রান্তিক চক্রবর্তী এবং তার স্ত্রী রাজন্যা হালদার আরজিকর কাণ্ডের আদলে ছবি করার পর দল থেকে বহিষ্কৃত হয়েছিলেন। সম্প্রতি রাজন্যা একটি বিস্ফোরক অভিযোগ করেন যে, তার এআই (AI) দ্বারা তৈরি নগ্ন ছবি ছাত্র পরিষদের নেতাদের মোবাইলে রয়েছে। একাধিকবার সংবাদ মাধ্যমের সামনে এই অভিযোগ করতে গিয়ে তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন, যার পর সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়।

তৃণমূলের একাংশ এবং বিরোধীরা তখন থেকেই প্রশ্ন তুলছিলেন, রাজন্যা যদি এই কথা জেনে থাকেন, তাহলে কেন তিনি তৎক্ষণাৎ কোনো আইনানুগ ব্যবস্থা নেননি? কেউ কেউ রাজন্যার ‘কুমিরের কান্নার’ পিছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যও দেখেছিলেন। কসবা কাণ্ডের পর রাজন্যা এবং প্রান্তিক বহুবার সংবাদ মাধ্যমের সামনে এসেছেন, কিন্তু কখনোই ঘুণাক্ষরেও কাউকে জানতে দেননি যে মনোজিত তাদের পূর্ব পরিচিত এবং প্রান্তিকের সুপারিশেই সে চাকরি পেয়েছিল।

আইনজীবী তিতাস মান্নার বিস্ফোরক দাবি

আইনজীবী তিতাস মান্না সরাসরি অভিযোগ করেছেন, টিএমসিপির লিগ্যাল সেলের মূল কান্ডারি হলেন এই প্রান্তিক চক্রবর্তী। এই প্রান্তিক চক্রবর্তীই মনোজিতকে লিগ্যাল সেলের কোঅর্ডিনেটরের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। তিতাস স্পষ্ট জানিয়েছেন, প্রান্তিক অনেক আগেই লিগ্যাল সেল তৈরি করে মনোজিত মিশ্রকে নিয়োগ করতে চেয়েছিলেন।

তবে তিতাস এবং অন্যদের কঠোর বিরোধিতায় তখন তা সম্ভব হয়নি। ২০২২ সালে তিতাসকে শোকজ করা হলে সেই সুযোগে প্রান্তিক মনোজিতকে নিয়োগ করেন। তিতাস আরও বলেন, “প্রথম থেকেই আমরা জানি মনোজিতের চরিত্র। তাই বিরোধিতা করেছিলাম। প্রান্তিক দলের ভিতরেই রাজনীতি করে মনোজিতকে নিয়ে এসেছে।” তিনি আরও যোগ করেন, “আমরা মনোজিতের বিভিন্ন দুর্নীতির কথা জানতাম কিন্তু প্রান্তিক তা মানেনি।”

সত্য উন্মোচন: গোপন তথ্য ফাঁস

দল থেকে বহিষ্কৃত হওয়ার পরেও রাজন্যা এবং প্রান্তিক কসবা কাণ্ডের পর বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। কখনো রাজন্যা একাই সাক্ষাৎকার দিয়ে বিস্ফোরক অভিযোগ করেছেন এবং মনোজিতকেও বহুবার কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন। কিন্তু এতো কিছুর মধ্যেও তারা নিজেদের আসল কীর্তিটা জনসমক্ষে আনেননি।

তবে আইনজীবী তিতাসের এই বিস্ফোরক অভিযোগের ভিত্তিতে আজ সবার কাছেই পরিষ্কার যে, মনোজিত এবং প্রান্তিক পূর্ব পরিচিত। এবং মনোজিতের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও প্রান্তিক তাকে লিগ্যাল সেলের কোঅর্ডিনেটর হিসেবে নিয়োগ করেছেন। এই নতুন তথ্য কসবা কাণ্ডের তদন্তে কোন দিকে মোড় নেয়, এখন সেটাই দেখার।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy