রাজস্থানের তদন্তকারীদের চোখে ধুলো দিয়ে কলকাতায় গা ঢাকা দিয়েও শেষ রক্ষা হলো না। খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত তিনজনকে অবশেষে বৃহস্পতিবার দুপুরে গ্রেফতার করল ফুলবাগান থানার পুলিশ।
সূত্রের খবর, ধৃত তিনজনই রাজস্থানের দিদওয়ানা জেলার কুচামান থানার বাসিন্দা। তাঁদের বিরুদ্ধে সেখানে খুনের অভিযোগে মামলা রুজু আছে। তদন্তকারীদের চোখে ধুলো দিতেই তাঁরা শহর কলকাতায় আশ্রয় নিয়েছিলেন।
স্থানীয়দের সন্দেহ, কার্নিশ থেকে নামার চেষ্টা
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এই গ্রেফতারের পিছনে স্থানীয়দের তৎপরতা ছিল প্রধান কারণ।
সন্দেহ: এদিন দুপুরে ফুলবাগান এলাকায় তিনজন অপরিচিত যুবককে ঘোরাঘুরি করতে দেখে স্থানীয়দের সন্দেহ হয়।
ধরা পড়া: এর কিছুক্ষণ পরেই দেখা যায়, তিনজনের মধ্যে একজন একটি বহুতলের কার্নিশ থেকে নামার চেষ্টা করছে। সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি নজরে আসে এলাকার বাসিন্দাদের। সন্দেহ আরও বাড়ে এবং তাঁরা দেরি না করে ফুলবাগান থানায় খবর দেন।
খবর পেয়েই দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে অভিযুক্তরা পালানোর চেষ্টা করলে প্রায় আধঘণ্টা ধরে চলে তাড়া ও পাল্টা তাড়ার খেলা। অবশেষে পুলিশ তিনজনকেই ধরে ফেলে।
পরিচয় গোপন করার চেষ্টা
থানায় নিয়ে গিয়ে শুরু হয় জিজ্ঞাসাবাদ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ধৃতরা নিজেদের পরিচয় গোপন করে পুলিশকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করে বলে অভিযোগ। কেউ নিজেকে শ্রমিক, কেউ বা ব্যবসায়ী পরিচয় দেয়। তবে দীর্ঘ জেরার পর তাদের কথায় অসঙ্গতি ধরা পড়ে এবং প্রকাশ্যে আসে আসল পরিচয়।
তাঁরা রাজস্থানের দিদওয়ানা জেলার বাসিন্দা এবং কুচামান থানায় একটি খুনের মামলায় অভিযুক্ত।
কলকাতা পুলিশের এক আধিকারিক এই বিষয়ে বলেন, “স্থানীয়দের তৎপরতায় বড় অপরাধীদের আমরা ধরতে পেরেছি। রাজস্থান পুলিশের সঙ্গে ইতিমধ্যেই যোগাযোগ করা হয়েছে।”
কলকাতা পুলিশের পক্ষ থেকে ধৃতদের সমস্ত নথি ও তথ্য রাজস্থানের নির্দিষ্ট থানায় পাঠানো হয়েছে। রাজস্থান পুলিশ খুব শীঘ্রই কলকাতায় এসে অভিযুক্তদের নিজেদের হেফাজতে নিতে পারে বলে সূত্র মারফত জানা গিয়েছে।
বর্তমানে ধৃতদের ফুলবাগান থানায় রাখা হয়েছে। ঘটনার তদন্তে নেমেছে কলকাতা পুলিশ। অপরাধীরা কীভাবে শহরে প্রবেশ করেছিল এবং কে বা কারা তাঁদের আশ্রয় দিতে সাহায্য করেছিল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। রাজ্য পেরিয়ে অপরাধীদের শহরে প্রবেশ রাজ্যের নিরাপত্তা ব্যবস্থাকেও ঘিরে প্রশ্ন তুলেছে।