ভোটার তালিকায় ‘কারচুপি’-র অভিযোগের জেরে বারুইপুর পূর্ব ও ময়নার ইআরও-কে সাসপেন্ড করার পর এবার নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার দিল্লি যাওয়ার আগে কলকাতা বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের সামনে তিনি অভিযোগ করেন যে, কমিশন এক্তিয়ার বহির্ভূতভাবে কাজ করছে এবং রাজ্য সরকারের কাজে বাধা দিচ্ছে।
অভিষেক বলেন, “নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব তখনই বর্তায়, যখন আদর্শ আচরণবিধি ঘোষণা হয়। তখন নির্বাচন কমিশন রাজ্যের প্রশাসন নিজের হাতে নিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন পরিচালনা করে। কিন্তু নির্বাচনের ১০-১১ মাস বাকি থাকতেই কমিশন এমন কাজ করছে, যা তিন-চার মাস আগে থেকে শুরু করার কথা।”
তিনি আরও অভিযোগ করেন যে, কমিশন বিজেপি-কে বাড়তি সুবিধা করে দেওয়ার জন্য রাজ্যকে কাজ করতে দিচ্ছে না। অভিষেকের কথায়, “নির্বাচন কমিশনকে কাজে লাগিয়ে বিজেপি এটা চাইছে যে, যারা বাংলা ভাষায় কথা বলেন, তারা যেন প্রত্যেকে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে না পারেন। নির্বাচন কমিশন নির্লজ্জ ভূমিকায় নেমেছে। এখন এটা নির্বাচন কমিশনের এক্তিয়ার নয়।”
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেন যে, বিজেপি একইভাবে বিচারব্যবস্থাকেও কাজে লাগিয়েছিল। উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, “২০২১ সাল থেকে আজ পর্যন্ত, এই চার বছরে কলকাতা হাইকোর্টের বিভিন্ন বেঞ্চ থেকে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্র সরকার প্রভাব খাটিয়েছে, তা বাংলার মানুষ দেখেছে।” ভোটের আগে এবার বিজেপি কমিশনকে কাজে লাগাচ্ছে বলে তার অভিযোগ।
প্রসঙ্গত, ভোটার তালিকায় কারচুপির অভিযোগে কমিশন বারুইপুর পূর্বের ইআরও দেবত্তম দত্ত চৌধুরী এবং ময়নার ইআরও বিপ্লব সরকার-কে সাসপেন্ড করেছে। একইসঙ্গে বারুইপুর পূর্বের এইআরও তথাগত মণ্ডল এবং ময়নার এইআরও সুদীপ্ত দাস-কেও সাসপেন্ড করা হয়েছে। এই বিষয়ে জাতীয় নির্বাচন কমিশন রাজ্যের মুখ্যসচিবকে একটি চিঠিও পাঠিয়েছে।
এর আগে বুধবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই বিষয়ে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিলেন যে, “শাস্তি দেব না। ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই। জীবন দিয়ে রক্ষা করব।” মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্যের পরই অভিষেকের এমন বিস্ফোরক প্রতিক্রিয়া রাজনৈতিক মহলে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে।