অর্থনৈতিক দেউলিয়া হওয়ার মুখে দাঁড়িয়ে থাকা পাকিস্তানের জন্য অস্বস্তি আরও বাড়ল। জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে আনতে কনডম ও গর্ভনিরোধক পণ্যের ওপর থেকে ১৮ শতাংশ জিএসটি কমানোর পরিকল্পনা করেছিল শেহবাজ শরিফ সরকার। কিন্তু পাকিস্তানের সেই আরজিতে সরাসরি ‘না’ বলে দিল আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (IMF)। ফলে আপাতত অগ্নিমূল্যই থাকছে এই সমস্ত জরুরি পণ্য।
কেন প্রস্তাব ফেরাল আইএমএফ?
প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের নির্দেশে পাকিস্তানের ফেডারেল বোর্ড অব রেভিনিউ (FBR) এই কর ছাড়ের জন্য আবেদন করেছিল। কিন্তু আইএমএফ সাফ জানিয়ে দিয়েছে, চলতি অর্থবর্ষের মাঝপথে কোনও কর কাঠামোয় বদল আনা সম্ভব নয়। সংস্থাটির মতে, কনডম ও গর্ভনিরোধক পণ্যে ছাড় দিলে পাকিস্তানের রাজকোষে প্রায় ৪০ থেকে ৬০ কোটি রুপির ঘাটতি দেখা দেবে। এছাড়া স্যানিটারি প্যাড ও বেবি ডায়াপারের ওপর থেকেও কর কমানোর আবেদন বাতিল করেছে আইএমএফ।
আইএমএফ কর্তারা স্পষ্ট জানিয়েছেন, এই কর ছাড় নিয়ে কোনো আলোচনা হতে পারে কেবল ২০২৬-২৭ অর্থবর্ষের বাজেট তৈরির সময়। বর্তমান ঋণ প্যাকেজের কঠোর শর্ত অনুযায়ী, রাজস্ব ঘাটতি বাড়ানো কোনোভাবেই বরদাস্ত করবে না তারা।
বিস্ফোরক জনসংখ্যা বনাম অর্থনৈতিক সংকট
বর্তমানে পাকিস্তানের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ২.৫৫ শতাংশ, যা বিশ্বের অন্যতম সর্বোচ্চ। প্রতি বছর প্রায় ৬০ লক্ষ মানুষ বাড়ছে দেশটিতে। বিশেষজ্ঞদের মতে, গর্ভনিরোধক পণ্যের দাম সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে থাকলে পরিবার পরিকল্পনা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হবে। এর সরাসরি কুপ্রভাব পড়বে স্বাস্থ্য ও শিক্ষা পরিষেবার ওপর। কিন্তু আইএমএফ-এর আশঙ্কা, কর কমালে পাচারকারীদের দৌরাত্ম্য বাড়তে পারে এবং রাজস্ব আদায়ে লক্ষ্যভ্রষ্ট হবে পাকিস্তান।
শর্তের বেড়াজালে ইসলামাবাদ
পাকিস্তান বর্তমানে আইএমএফ-এর কাছ থেকে বড় অংকের ঋণ সহায়তা নিচ্ছে। সম্প্রতি ৩.৩ বিলিয়ন ডলার ঋণের একটি কিস্তি ছাড় করা হয়েছে। আইএমএফ-এর নির্দেশ মেনেই ১৩.৯৭৯ ট্রিলিয়ন রুপি রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে এগোচ্ছে পাকিস্তান। এই কঠিন পরিস্থিতিতে শর্ত মানা ছাড়া শেহবাজ সরকারের কাছে দ্বিতীয় কোনো বিকল্প পথ খোলা নেই।