বাংলাদেশে একের পর এক হিন্দু যুবককে পিটিয়ে ও পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় এবার গর্জে উঠল ওপার বাংলার শিল্পমহল। প্রখ্যাত ধ্রুপদী সঙ্গীতশিল্পী ওস্তাদ রশিদ খানের পুত্র আরমান খান সাফ জানিয়ে দিলেন, এই নৃশংসতার প্রতিবাদে তিনি বাংলাদেশে নিজের সমস্ত নির্ধারিত শো বাতিল করছেন। শুধু তাই নয়, ভবিষ্যতে আর কোনোদিন ওই দেশে পা না রাখারও কঠোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।
টিভি৯ বাংলায় দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আরমান খান তাঁর তীব্র ক্ষোভ উগরে দিয়ে বলেন, “আমি জানি না বাংলাদেশের মুসলিমরা নিজেদের কী ভাবতে শুরু করেছে। এভাবে প্রকাশ্য দিবালোকে মানুষ মারার অধিকার কারও নেই। এদের এই পৈশাচিক আচরণের জন্য গোটা মুসলিম সমাজের বদনাম হচ্ছে। যারা শান্তির ধর্মকে হিংসার ধর্মে পরিণত করছে, তাদের আমি ধিক্কার জানাই।” তিনি আরও যোগ করেন যে, বাংলাদেশে তাঁর বহু হিন্দু বন্ধু রয়েছেন যারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন কিন্তু ভারতে আসার ভিসা পাচ্ছেন না। তাঁদের অসহায়ত্ব আরমানকে ব্যথিত করেছে।
আরমানের এই সিদ্ধান্তকে পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছেন প্রবীণ শিল্পী পল্লব কীর্তনিয়া। তিনি বলেন, “একজন রুচিশীল ও সংস্কৃতিমনস্ক শিল্পী হিসেবে আরমানের এই প্রতিবাদ অত্যন্ত সময়োপযোগী। যেকোনো সুস্থ মানুষেরই এমন নৃশংসতার বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া উচিত।”
পাশাপাশি, বাংলাদেশে সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ‘ছায়ানট’-এ বর্বরোচিত হামলার ঘটনায় স্তম্ভিত সঙ্গীতশিল্পী রাঘব চট্টোপাধ্যায়। ছায়ানটের ভেতরে ঢুকে হারমোনিয়াম, তবলা ভেঙে ফেলা এবং আসবাবপত্র তছনছ করার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে রাঘব বলেন, “আমি এই বাংলাদেশকে চিনতে পারছি না। যেখানে সঙ্গীতের পবিত্র প্রতিষ্ঠানেও হামলা হয়, সেই পরিবেশ কল্পনা করাও কঠিন। আমি ভগবানের কাছে প্রার্থনা করি যেন দ্রুত স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসে।” বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা এবং সংস্কৃতির ওপর এই নগ্ন আঘাত এখন আন্তর্জাতিক স্তরেও আলোড়ন তৈরি করেছে।