‘এটাই শেষ লড়াই, হারলে আর দল করা যাবে না!’ শমীকের বিস্ফোরক বার্তায় তোলপাড় বঙ্গ রাজনীতি

২০২৬-এর রণঘণ্টা কি তবে বেজে গেল? বিধানসভা নির্বাচনের নির্ঘণ্ট ঘোষণা হতে এখনও দেরি, কিন্তু বাংলার রাজনৈতিক পারদ চড়তে শুরু করেছে রাজ্য বিজেপির সভাপতি শমীক ভট্টাচার্যের এক মন্তব্যে। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ীর ১০১তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে ন্যাশনাল লাইব্রেরিতে আয়োজিত ‘সুশাসন দিবসে’র মঞ্চ থেকে কর্মীদের কার্যত ‘ডু অর ডাই’ বা ‘মরণ-বাঁচন’ লড়াইয়ের ডাক দিলেন তিনি। শমীক স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিলেন, “এই লড়াই আমাদের শেষ লড়াই। না হলে আর আমরা পার্টি করতে পারব না।”

তৃণমূলের পতন নিশ্চিত, দাবি শমীকের: রাজ্য বিজেপি সভাপতি আত্মবিশ্বাসের সুরে দাবি করেন, ইডি বা সিবিআই-এর তৎপরতা না থাকলেও তৃণমূলের হার নিশ্চিত। তিনি বলেন, “২০২৬ সালে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের মাটিতে অটলবিহারী বাজপেয়ীর আদর্শের সরকার প্রতিষ্ঠা হবেই। তৃণমূল চলে যাচ্ছে, ওদের কেউ আটকে রাখতে পারবে না। এমনকি আজ যদি ইডি-সিবিআই দফতরে তালাও লাগিয়ে দেওয়া হয়, তবুও তৃণমূল হারবে।” তাঁর মতে, মানুষ এখন এই শাসন থেকে পরিত্রাণ চাইছে এবং তারা বিজেপিকে ভোট দেওয়ার জন্য প্রস্তুত।

কর্মীদের প্রতি কড়া বার্তা: একুশের নির্বাচনে স্বপ্নভঙ্গ হওয়ার পর ছাব্বিশে আর কোনো খামতি রাখতে চায় না গেরুয়া শিবির। শমীক ভট্টাচার্য দলের নেতা-কর্মীদের সতর্ক করে বলেন, “এখন চুপ করে বসে থাকার সময় নয়। মানুষ দেখছে বিজেপি তৈরি কি না। আপনারা কোন পদে আছেন সেটা বড় কথা নয়, এসআইআর (SIR) প্রক্রিয়ায় প্রত্যেককে অংশ নিতে হবে।” তৃণমূলের বিরুদ্ধে বিভ্রান্তি ছড়ানোর অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, বিজেপি-র চিরাচরিত ভোটব্যাঙ্কে ফাটল ধরাতে চাইছে শাসক দল, আর সেই ফাঁদে পা দেওয়া চলবে না।

বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গা ইস্যু: অনুপ্রবেশ ইস্যুতেও সুর চড়িয়েছেন শমীক। তিনি বলেন, “রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশি খুঁজে বের করার দায়িত্ব সরকারের। এখন আর শুধু বক্তৃতায় কাজ হবে না, মাঠে নামতে হবে।” তাঁর লক্ষ্য পরিষ্কার— গঙ্গোত্রী থেকে গঙ্গাসাগর পর্যন্ত এক মতাদর্শের সরকার বা ‘ডাবল ইঞ্জিন’ সরকার গড়া।

বামপন্থীদের আক্রমণ: নিজের বক্তব্যে সিপিএম-কেও বিঁধতে ছাড়েননি শমীক ভট্টাচার্য। ১৯৪৭-এর স্মৃতি মনে করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, “জ্যোতি বসুরা ভেতরে বাংলা ভাগের পক্ষে ভোট দিয়ে বাইরে এসে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের নামে বিষোদ্গার করতেন। এই মিথ্যাচারের জবাব দেওয়ার সময় এসেছে।”

সব মিলিয়ে, টিকিট পাওয়া বা না পাওয়া নয়, বরং দলের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য ২০২৬-এর নির্বাচনকে জীবনের সেরা লড়াই হিসেবে দেখছেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি। তাঁর এই ‘শেষ লড়াই’ মন্তব্যে শোরগোল পড়ে গিয়েছে রাজনৈতিক মহলে।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy