ভারতীয় বায়ুসেনার (Indian Air Force) ইতিহাসে ‘অপারেশন সিঁদুর’ (Operation Sindoor) হলো মোড় ঘোরানো সাফল্য। এই অভিযানের বিষয়ে বৃহস্পতিবার বার্ষিক প্রেস কনফারেন্সে বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন এয়ার চিফ মার্শাল অমরপ্রীত সিং। তিনি দাবি করেন, এই অভিযানের মাধ্যমেই এক রাতেই পাকিস্তানকে হাঁটু গেড়ে বসতে বাধ্য করা হয়েছিল।
বায়ুসেনা প্রধানের কথায়, এই অভিযান ইতিহাসে স্থান পাবে। তিনি এটিকে ‘শল্যচিকিৎসার মতো নিখুঁত আঘাত’ বলে বর্ণনা করেন।
৩০০ কিমি গভীরে লক্ষ্যভেদ: ব্যবহৃত হলো S-400?
অমরপ্রীত সিং জানান, ‘অপারেশন সিঁদুর’ ছিল এ বছরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সামরিক অভিযান। এই অভিযানে সবচেয়ে বড় ভূমিকা নেয় দীর্ঘ পাল্লার সারফেস-টু-এয়ার মিসাইল সিস্টেম।
দূরতম লক্ষ্য: তিনি বলেন, “সবচেয়ে দূরের লক্ষ্যবস্তু ধ্বংস করা হয়েছিল ৩০০ কিমিরও বেশি গভীরে। আমাদের শক্তিশালী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাই পরিস্থিতি পাল্টে দেয়।”
অস্ত্র অনুমান: কোন অস্ত্রব্যবস্থা ব্যবহার হয়েছিল, তা খোলসা না করলেও সামরিক মহলের অনুমান, রাশিয়া থেকে কেনা উন্নতমানের এস-৪০০ (S-400) মিসাইল ব্যবহৃত হয়েছিল।
সেনা, নৌসেনা ও বায়ুসেনার যৌথ পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নকে অমরপ্রীত সিং এই সাফল্যের কৃতিত্ব দেন। তাঁর মন্তব্য, “আমরা ছিলাম অভেদ্য আর সঠিক।”
মিথ্যা তথ্যের মোকাবিলা এবং আত্মনির্ভরতার পথে বায়ুসেনা
বায়ুসেনা প্রধান জানান, এই অভিযানের সময় মিথ্যা খবর ও বিভ্রান্তির জাল ছড়ানো হয়েছিল। তাঁর কথায়, ভুয়ো তথ্যের ভিড়ে দেশের সংবাদমাধ্যম পাশে দাঁড়িয়ে জনগণের মনোবল নষ্ট হতে দেয়নি।
ভবিষ্যতের যুদ্ধের ধরন আলাদা হবে, তাই তিনি সমন্বিত প্রস্তুতির ওপর জোর দেন। তিনি আত্মনির্ভরতার পথে ভারতের পদক্ষেপগুলি তুলে ধরেন:
দেশীয় প্রকল্প: এলসিএ এমকে-১এ-র অর্ডার দেওয়া হয়েছে, এলসিএ এমকে-২ এবং ইন্ডিয়ান মাল্টি-রোল হেলিকপ্টার প্রকল্পও দ্রুত এগোচ্ছে।
প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন: দেশীয় রাডার, সিস্টেম ও উদ্ভাবন তৈরি হচ্ছে। তবে প্রয়োজনে গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তি বাইরে থেকেও সংগ্রহ করা হবে।
আগামী ৮ অক্টোবর হিন্দন এয়ারবেসে ৯৩তম বায়ুসেনা দিবস পালিত হবে। সেই অনুষ্ঠানে ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর পতাকা নিয়ে উড়বে মি-১৭ হেলিকপ্টার। প্রদর্শনীতে রাফাল, সু-৩০ এমকেআই সহ আধুনিক অস্ত্রশস্ত্রও থাকছে।