এক প্লেটে মোমো, সঙ্গে আনলিমিটেড স্যুপ ফ্রি! এগরায় রমেশের ‘টেস্টি মোমো’র সামনে রোজ ভিড়

মাত্র পাঁচ পিস মোমোর এক প্লেট কিনলেই মিলছে আনলিমিটেড স্যুপ একেবারে বিনামূল্যে! এমন লোভনীয় অফার আর অতুলনীয় স্বাদের মোমোর টানে প্রতিদিনই সন্ধ্যায় পূর্ব মেদিনীপুর জেলার এগরা শহরের ‘টেস্টি মোমো’ দোকানের সামনে ভিড় জমাচ্ছেন মোমো প্রেমীরা।

চিকেন হোক বা ভেজ—যে মোমোই নিন না কেন, আনলিমিটেড স্যুপের এই অফার চলছেই। দোকানদার রমেশ দাস নিজেই আগ্রহ করে যতবার চাইছেন, ততবারই গরম স্যুপ বাড়িয়ে দিচ্ছেন ক্রেতাদের। এই স্বাদের জন্যই কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই দোকানের সমস্ত মোমো বিক্রি হয়ে যায়।

শিলিগুড়ি থেকে শেখা কারিগরি:

রমেশ দাসের বাড়ি ভগবানপুর ২ ব্লকের জুখিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের কুতুবুদ্দিন গ্রামে। সংসারের দায়িত্ব নিতেই খুব অল্প বয়সে কর্মজীবন শুরু করেন তিনি। ২০১৪ সালে কলেজ দ্বিতীয় বর্ষে পড়াকালীন রোজগারের খোঁজে পাড়ি দেন উত্তরবঙ্গের শিলিগুড়ি।

সেখানে একটি হোটেলে কাজ করার সময়ই মোমো বানানো শেখেন রমেশ। তাঁর হাতে তৈরি মোমোর স্বাদ এতটাই ভালো ছিল যে দ্রুতই সহকর্মী থেকে শুরু করে খদ্দের—সকলেই তাঁর রান্নার গুণের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়ে ওঠেন।

৪০ কিমি বাইক চালিয়ে যাত্রা:

কয়েক বছর পর বাড়ি ফিরে রমেশ নিজের মোমো দোকান শুরু করার পরিকল্পনা করেন। প্রথমে ভগবানপুর থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূরে এগরা কৃষি মেলায় তাঁর মোমোর কদর বাড়ে। সেই বিপুল চাহিদাকে দেখেই তিনি এগরা শহরে একটি স্থায়ী দোকান খোলেন—নাম দেন ‘টেস্টি মোমো’

দোকানের শুরু থেকেই তিনি চালু করেন ‘মোমো খেলেই আনলিমিটেড স্যুপ ফ্রি’ এই বিশেষ অফার। রমেশের কথায়, “আপনি যতক্ষণ স্যুপ খেতে পারবেন, ততক্ষণ আমি দিয়ে যাব।”

রমেশ প্রতিদিন বিকেল চারটেয় দোকান খোলার জন্য ৪০ কিলোমিটার বাইক চালিয়ে এগরায় পৌঁছন। রাত আটটার মধ্যেই সব মোমো বিক্রি হয়ে গেলে, তিনি আবার রাতের বেলা বাড়ি ফেরেন। এত দূরে দোকান করার কারণ জানতে চাইলে তিনি জানান, এগরাতেই তাঁর মোমোর চাহিদা সবচেয়ে বেশি এবং এখানকার মানুষ তাঁর স্বাদকে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসেন। মানুষের এই ভালোবাসাই তাঁর পরিশ্রমের মূল প্রেরণা।

আপনি যদি কখনও এগরা যান, তবে এই দোকানের অতুলনীয় মোমো এবং আনলিমিটেড স্যুপের অভিজ্ঞতা সত্যিই মিস করবেন না!

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy