ভারতের প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিদ্বেষমূলক মনোভাব সম্প্রতি প্রকাশ পেয়েছে। ভারতের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক চাপিয়ে এবং ভারত ও রাশিয়ার অর্থনীতিকে ‘মৃত অর্থনীতি’ বলে অপমান করে তিনি আন্তর্জাতিক মহলে বিতর্ক সৃষ্টি করেছেন। তবে আশ্চর্যের বিষয় হলো, এই ‘মৃত অর্থনীতি’-তেই ট্রাম্পের ব্যবসার দারুণ রমরমা। আমেরিকার পর ভারতেই তার সংস্থার সবথেকে বড় বাজার।
ডোনাল্ড ট্রাম্প মূলত একজন ব্যবসায়ী, যার রিয়েল এস্টেট এবং হোটেল ব্যবসার বিশাল সাম্রাজ্য রয়েছে। দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, ভারতের এই ‘মৃত অর্থনীতি’ থেকে ট্রাম্পের ব্যবসা শুধুমাত্র লাইসেন্সিং ফি-এর মাধ্যমেই প্রায় ১৭৫ কোটি টাকা আয় করেছে। ২০১২ সালে ভারতে যাত্রা শুরু করা ট্রাম্পের রিয়েল এস্টেট ব্যবসা ৩ মিলিয়ন স্কোয়ার ফিট থেকে প্রায় চারগুণ বেড়ে বর্তমানে ১১ মিলিয়ন স্কোয়ার ফুটে পৌঁছেছে।
শূন্য বিনিয়োগ, লাভ কোটি কোটি:
সবচেয়ে চমকপ্রদ বিষয় হলো, ভারত থেকে বিপুল লাভ করলেও ট্রাম্পের বিনিয়োগ এক্ষেত্রে শূন্য। দ্য ট্রাম্প অর্গানাইজেশন ভারতে ‘ব্র্যান্ড লাইসেন্সিং মডেল’-এর মাধ্যমে কাজ করে। এর মানে হলো, বিলাসবহুল বাড়ি বা রিয়েল এস্টেট প্রকল্পগুলো তৈরি করে ভারতীয় নির্মাণ সংস্থাগুলো, আর তাতে কেবল ‘ট্রাম্প’ নামটি ব্যবহার করা হয়। সহজ কথায়, ভারতীয় নির্মাণ সংস্থাই বিনিয়োগ, নির্মাণ এবং প্রচারের সব কাজ করে, আর শুধু নাম ব্যবহারের জন্য ট্রাম্প লাভের ভাগ পান।
ভারতে ট্রাম্প অর্গানাইজেশনের অন্যতম পার্টনার হলো ট্রিবেকা। এছাড়াও লোধা গ্রুপ, পঞ্চশীল রিয়েলটি, এম৩এম গ্রুপ এবং ইউনিমার্কের মতো সংস্থাগুলোও ট্রাম্পের সঙ্গে কাজ করে। কলকাতায় বাইপাসের ওপর ট্রাম্প টাওয়ার তৈরির কাজ করছে এই সংস্থা, যা ২০১৭ সালে শুরু হলেও এখনও শেষ হয়নি। ২০২৬ সালের জুন মাসের মধ্যে টাওয়ারের কাজ শেষ হওয়ার কথা।
মুম্বাই, পুনে, গুরুগ্রাম এবং কলকাতায় ট্রাম্প টাওয়ার রয়েছে। নয়ডা, হায়দ্রাবাদ এবং বেঙ্গালুরুতে আরও ৬টি নতুন প্রকল্পের কাজ চলছে। এর মধ্যে পুনের ২৭ তলার টুইন টাওয়ার ‘ট্রাম্প ওয়ার্ল্ড সেন্টার’ থেকে ২৫০০ কোটি টাকা আয় হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এছাড়াও ট্রাম্প গল্ফ কোর্স ও লাক্সারি ভিলার মতো প্রকল্পও তৈরি হচ্ছে। ট্রিবেকার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ট্রাম্প ব্র্যান্ডের ব্যবসা ভারতে ১৫ হাজার কোটি টাকায় পৌঁছবে।
দ্বিতীয়বার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর গত ৮ মাসে ভারতে ট্রাম্প ব্র্যান্ডের ব্যবসা আরও দ্রুতগতিতে বৃদ্ধি পেয়েছে।