বসতপুরের শ্মশান ও গোরস্থানে যাওয়ার রাস্তা নেই। অগত্যা প্রায় এক কোমর জল পেরিয়ে কাঁধে করে মৃতদেহ নিয়ে শ্মশান-গোরস্থানে যেতে বাধ্য হচ্ছেন গ্রামবাসীরা। মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লকের তুলসিহাটা গ্রাম পঞ্চায়েতের বসতপুরে এমন ভয়ঙ্কর ছবি সামনে আসতেই তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে জেলাজুড়ে। স্থানীয় তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে সেচ দফতরের জমি দখল করে রাস্তা বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, বসতপুর এলাকায় পাশাপাশি থাকা শ্মশান ও গোরস্থানে যাওয়ার পথে সেচ দফতরের প্রায় ৫০ শতক জমি দীর্ঘ দিন ধরে দখল করে চাষাবাদ করছেন স্থানীয় তৃণমূল কর্মী সাত্তার আলি। তাঁর জন্যই বন্ধ হয়েছে গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাটি। দীর্ঘদিন ধরে ভোগান্তির শিকার হয়ে গত বছর অতিরিক্ত জেলাশাসকের কাছে অভিযোগ জানিয়েছিলেন গ্রামবাসীরা। অভিযোগের ভিত্তিতে সেচ দফতরের লোকজন মাপজোক করে গেলেও সমস্যার সমাধান হয়নি। শাসকদলের ঘনিষ্ঠ হওয়ায় প্রশাসনও কোনও পদক্ষেপ নেয়নি বলে অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয়রা।
শুক্রবার সকালে এলাকার বাসিন্দা সোলো বিবির মৃত্যু হলে গ্রামবাসীরা ফের চরম সমস্যায় পড়েন। রাস্তা বন্ধ থাকায় প্রায় ২ কিলোমিটার পথ ঘুরে মরা মহানন্দার কোমর জল ডিঙিয়ে দেহ গোরস্থানে নিয়ে যেতে হয় তাঁদের। এই মর্মস্পর্শী ছবি প্রকাশ্যে আসতেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা।
বিজেপির অভিযোগ, তৃণমূলের লোকজন নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য সাধারণ মানুষকে সমস্যায় ফেলছেন। বিজেপির উত্তর মালদা সাংগঠনিক জেলার সম্পাদক রুপেশ আগরওয়ালা বলেন, “রাজ্যে যেখানে যেখানে সাধারণ মানুষ সমস্যায় পড়েছেন, সেখানেই দেখা যাচ্ছে তৃণমূলের লোকের স্বার্থ জড়িয়ে রয়েছে।”
অন্যদিকে, চাঁচলের তৃণমূল বিধায়ক নীহাররঞ্জন ঘোষ আশ্বাস দিয়েছেন, প্রশাসনের সহযোগিতায় বিষয়টি মিটিয়ে নেওয়া হবে। তিনি বলেন, “কেন আবার এই পরিস্থিতি তৈরি হল, তা খোঁজ নিয়ে দেখব। প্রয়োজনে প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা হবে।” যদিও অভিযুক্ত সাত্তার আলির দাবি, তিনি জমিতে কিছু ফলের গাছ লাগিয়েছেন, তবে কোনও রাস্তা বন্ধ করেননি।