পাঞ্জাবের কয়েকটি গ্রাম পঞ্চায়েতের নতুন ফরমান নিয়ে তুমুল বিতর্ক শুরু হয়েছে। একই গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে বিবাহ নিষিদ্ধ করার এই সিদ্ধান্ত একদিকে যেমন গ্রামীণ সমাজের অভ্যন্তরীণ সমস্যা সমাধানের চেষ্টা হিসেবে দেখা হচ্ছে, তেমনি এর ফলে ব্যক্তিগত স্বাধীনতার ওপর হস্তক্ষেপের অভিযোগও উঠছে। পঞ্চায়েতগুলোর দাবি, একই গ্রামের ছেলে-মেয়েদের মধ্যে বিয়ে পারিবারিক কলহ এবং সামাজিক সম্প্রীতি নষ্ট করছে।
এই ধরনের সিদ্ধান্ত শুধুমাত্র একটি সামাজিক ফরমান নয়, বরং এটি একটি নির্দিষ্ট ধরনের সামাজিক চাপ তৈরি করছে। এর পেছনে যে ঘটনাগুলি রয়েছে, তা গ্রামীণ সমাজের জটিলতারই প্রতিফলন। যেমন, মোগা জেলার ঘাল কালান এলাকায় এক যুবক গ্রামের একটি মেয়েকে বিয়ে করার পর তার পরিবারকে নিগ্রহের শিকার হতে হয়েছে এবং গ্রাম ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছে। এই ঘটনা থেকেই বোঝা যায়, পঞ্চায়েতগুলো কতটা কঠোর পদক্ষেপ নিতে পারে।
মানকপুর শরিফ পঞ্চায়েতের সিদ্ধান্তটি আরও চরমপন্থী। তারা শুধু সামাজিকভাবে বয়কট করার কথাই বলেনি, বরং নিকটবর্তী কোনো গ্রামেও তাদের থাকতে না দেওয়ার এবং সাহায্যকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে। এই ধরনের পদক্ষেপ মানবাধিকার এবং ব্যক্তিগত পছন্দের স্বাধীনতার পরিপন্থী বলে অনেক সমাজকর্মী এবং আইনজীবীরা মনে করছেন।
পঞ্চায়েত প্রধানরা সরকারের কাছে এই ধরনের বিবাহ নিষিদ্ধ করার জন্য আইন প্রণয়নের দাবি জানালেও, এর ফলে গ্রামীণ সমাজে বিভাজন আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। অনেক পরিবার এই ধরনের ফরমানের বিরুদ্ধে আপত্তি জানাচ্ছে, যা এই বিতর্কের গভীরতা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। এই ঘটনাটি গ্রামীণ ভারতে আধুনিকতা এবং ঐতিহ্যগত সামাজিক নিয়মের মধ্যে সংঘাতের এক নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।