দুর্গাপূজা কমিটিগুলোকে সরকারি অনুদান হিসেবে ১ লক্ষ ১০ হাজার টাকা দেওয়ার ঘোষণার পর এবার কলকাতা পুরসভাতেও একই ধরনের বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। ‘খেলা হবে দিবস’ এবং ‘রাখিবন্ধন উৎসব’ পালনের জন্য পুরনিগম প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করেছে বলে জানা গেছে, যা নিয়ে বিরোধীরা সরব হয়েছে। তাদের অভিযোগ, যেখানে গরিব মানুষদের সাধারণ ত্রাণ (জিআর) বাবদ বরাদ্দ গত তিন বছর ধরে আটকে আছে, সেখানে উৎসবে এত বিপুল পরিমাণ টাকা খরচ করা হচ্ছে।
কলকাতা পুরনিগমের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ১৪৪টি ওয়ার্ডে রাখিবন্ধন উৎসব পালনের জন্য প্রতি ওয়ার্ডে ২০ হাজার টাকা এবং ‘খেলা হবে দিবস’ পালনের জন্য ১৫ হাজার টাকা করে বরাদ্দ করা হয়েছে। সব মিলিয়ে এই দুটি কর্মসূচিতে মোট ৫০ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা খরচ হবে।
বিজেপি কাউন্সিলর সজল ঘোষ এই সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করেছেন। তার অভিযোগ, গত তিন বছর ধরে গরিব ও প্রান্তিক মানুষরা তাদের বার্ষিক ত্রাণ বাবদ ১৪৪৪ টাকা পাননি। তিনি বলেন, “ফিরহাদ হাকিমের নেতৃত্বাধীন পুরসভা কোটি টাকা খরচ করে দুর্গাপূজা কমিটিগুলোকে নিয়ে বৈঠক করতে পারে, অথচ হাজার হাজার গরিব মানুষের প্রাপ্য টাকা দিতে পারছে না। এটা তাদের অমানবিক ভোট-রাজনীতির ফল।” সজল ঘোষের দাবি, তৃণমূলের অনেক কাউন্সিলরও মাসিক অধিবেশনে এই বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
অন্যদিকে, কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ সদস্য দেবাশিস কুমার জানিয়েছেন, এই দুটি কর্মসূচি রাজ্য সরকারের নির্দেশে পালন করা হচ্ছে। এই খরচ বাবদ টাকা রাজ্য সরকারই পুরসভাকে দেবে। তিনি বলেন, এটি কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি নয়, সব দলের কাউন্সিলরদের ওয়ার্ডেই এটি পালিত হবে।
তবে বিরোধীদের প্রশ্ন, যেখানে রাজ্য সরকারের কাছে জিআর-এর টাকা নেই বলে গরিবদের ত্রাণ আটকে আছে, সেখানে উৎসব পালনের জন্য এত টাকা কোথা থেকে আসছে? দুর্গাপূজা কমিটির অনুদান এবং এই নতুন বরাদ্দের ঘটনায় রাজ্য সরকারের আর্থিক নীতি এবং অগ্রাধিকার নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। গরিব মানুষদের ত্রাণ না দিয়ে উৎসব-অনুষ্ঠানে বিপুল অর্থ খরচের এই প্রবণতা সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি করেছে।