উৎসবের আগে ভেজাল খাদ্যের হানা! ১,১০০ কেজি নকল পনীর ও ২,৫০০ কেজি পচা ‘মাওয়া’ উদ্ধার, কী দিয়ে তৈরি হচ্ছিল জানেন?

উৎসবের মরসুমে মিষ্টি, দুগ্ধজাত পণ্য (যেমন খোয়া, পনীর), তেল, ঘি এবং মশলার চাহিদা ব্যাপক বেড়ে যাওয়ায় মুনাফাখোর ব্যবসায়ীরা ভেজাল মেশানোর সুযোগ খুঁজে নেয়। জনস্বাস্থ্যের জন্য এই গুরুতর বিপদ রুখতে উত্তর প্রদেশ স্বাস্থ্য বিভাগ এখন চরম সক্রিয়।

একটি বড়সড় অভিযানে সাহারানপুর-দিল্লি হাইওয়ে থেকে খাদ্য সুরক্ষা ও ঔষধ প্রশাসন (FSSAI)-এর দল দুটি গাড়িতে থাকা মোট ১,১০০ কিলোগ্রাম ভেজাল পনীর বাজেয়াপ্ত করেছে। পাশাপাশি মীরাটেও ২,৫০০ কিলোগ্রাম নকল ‘মাওয়া’ উদ্ধার করে তা নষ্ট করা হয়েছে।

নকল পনীর তৈরি হচ্ছিল রিফাইন্ড তেল দিয়ে
সাহারানপুরে বাজেয়াপ্ত হওয়া ১,১০০ কেজি পনীর ঘটনাস্থলেই ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, এই পনীর মীরাটের সরধনা এলাকায় রিফাইন্ড তেল এবং গুঁড়ো দুধের মাধ্যমে তৈরি করা হচ্ছিল। এটি পশ্চিম উত্তর প্রদেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করার পরিকল্পনা ছিল।

খাদ্য বিভাগের দল বাজেয়াপ্ত হওয়া পনীরের নমুনা ফুড সেফটি ভ্যানে পরীক্ষা করে নিশ্চিত হয় যে, এটি ভেজাল এবং স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর হতে পারে। এরপর জেসিবি-র সাহায্যে গর্ত খুঁড়ে সমস্ত পনীর নষ্ট করে দেওয়া হয়।

এসিএফ অশোক শর্মা জানান, গোপন সূত্র মারফত খবর পেয়ে সারারাত ধরে হাইওয়েতে অপেক্ষা করে এই অভিযান চালানো হয়। পনীরকে তাজা দেখানোর জন্য নীল রঙের ড্রামে বরফ দিয়ে সংরক্ষণ করা হয়েছিল।

মীরাটে ২৫ কুইন্টাল পচা ‘মাওয়া’ উদ্ধার
এদিকে, মীরাট জেলাতেও খাদ্য বিভাগের দল আজ সকালে আরও একটি বড় পদক্ষেপ নেয়। মীরাটের লাল কে বাজার এলাকার মাওয়া (খোয়া) মন্ডিতে অভিযান চালিয়ে ২,৫০০ কিলোগ্রাম নকল মাওয়া বাজেয়াপ্ত করা হয়।

এই মাওয়া একটি পিক আপ ভ্যানে পাওয়া যায়, যেখান থেকে দুর্গন্ধ আসছিল এবং স্বাদে তেঁতো ছিল। নমুনা পরীক্ষায় মাওয়ার গুণমান খারাপ প্রমাণিত হয়। এরপর প্রায় ৫.৫ লাখ টাকা মূল্যের সমস্ত মাওয়া বাজেয়াপ্ত করে নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে।

বিভাগ জানিয়েছে, এই মাওয়া এতটাই ক্ষতিকর ছিল যে এটি খেলে মানুষের শরীরে অ্যাসিডের মাত্রা (Acid Level) অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যেত এবং নানা ধরনের রোগ হতে পারত। এই ঘটনায় ৪ জন অভিযুক্তকে চিহ্নিত করেছে খাদ্য বিভাগ।

খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তা দীপক কুমার জানান, তাদের মোবাইল ভ্যান এখন নিয়মিতভাবে বিভিন্ন স্থানে পরীক্ষা চালাচ্ছে এবং এই অভিযান অব্যাহত থাকবে। তিনি সাধারণ মানুষের কাছে আবেদন করেছেন যে, শুধুমাত্র প্রমাণিত দোকান এবং ব্র্যান্ডেড পণ্য থেকেই পনীর ও অন্যান্য দুগ্ধজাত সামগ্রী কিনতে হবে। কোনো সন্দেহজনক খাদ্যদ্রব্যের বিষয়ে দ্রুত বিভাগকে অবহিত করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy