রাজ্যের ১৭টি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে দীর্ঘদিনের জট অবশেষে কিছুটা কাটল। শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় এবং কোচবিহার বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য উপাচার্যের নাম চূড়ান্ত করেছে। একই সঙ্গে, বাকি ১৫টি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগের দায়িত্ব একটি সিলেকশন কমিটির হাতে তুলে দিয়েছে শীর্ষ আদালত। বিচারপতি সূর্যকান্ত এবং বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হয়, যেখানে ঐকমত্যের ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
আংশিক জট কাটল:
রাজ্যের মোট ৩৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ১৯টিতে উপাচার্য নিয়োগ সম্পন্ন হলেও বাকি ১৭টি বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে বিতর্ক চলছিল। এই ১৭টির মধ্যে যাদবপুর, কলকাতা এবং রবীন্দ্রভারতীর মতো নামকরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও রয়েছে। রাজ্য সরকার প্রস্তাবিত উপাচার্যদের নামের তালিকায় আচার্য তথা রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস প্রথমে আপত্তি জানান এবং বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টে নিয়ে যান। শীর্ষ আদালত প্রথমে নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের পরামর্শ দিলেও তাতে কোনো ফল হয়নি। এরপর বিচারপতি ইউ ইউ ললিতের নেতৃত্বে একটি সার্চ কমিটি তৈরির নির্দেশ দেওয়া হয়।
শুক্রবার সেই মামলার শুনানিতে সুপ্রিম কোর্ট রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে সোনালী চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায়কে বেছে নেয়। অন্যদিকে, কোচবিহার বিশ্ববিদ্যালয়ে মুখ্যমন্ত্রীর চিহ্নিত ‘অর্ডার অফ প্রেফারেন্স’-এর তালিকায় থাকা প্রথম প্রার্থীকে মান্যতা দেওয়া হয়। এর মাধ্যমে ১৭টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে দু’টির জট পুরোপুরি কেটে যায়।
বাকি ১৫টির ভবিষ্যৎ:
বাকি ১৫টি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগের বিষয়ে শীর্ষ আদালত পর্যবেক্ষণ দিয়েছে যে, এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলির উপাচার্যদের নাম আগে গঠিত সিলেকশন কমিটি চূড়ান্ত করবে। এই কমিটিই এখন বাকি উপাচার্যদের নাম নির্বাচন করবে, যার পর তা অনুমোদনের জন্য আচার্যের কাছে পাঠানো হবে।
এই মামলার পরবর্তী শুনানি চার সপ্তাহ পর হবে বলে জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। এই রায়কে রাজ্যের শিক্ষা ক্ষেত্রে এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে, যা উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্য সরকার এবং রাজ্যপালের মধ্যে চলা দীর্ঘদিনের সংঘাতের অবসান ঘটাতে সাহায্য করবে বলে আশা করা যায়।