বছরের শেষ লগ্নে উত্তরবঙ্গের আলিপুরদুয়ারের চিলাপাতায় মেচ এবং বোরো জনজাতির অন্যতম প্রধান উৎসব বরাই বাথৌ পুজো-কে ঘিরে এখন উৎসবের আমেজ। বরাই বাথৌ বোরো জনজাতির প্রধান দেবতা, এবং এই পুজো সরাসরি প্রকৃতির কাছে নিবেদন করা হয়। এই ঐতিহ্যবাহী পুজো তাঁদের সংস্কৃতির সঙ্গে নিবিড়ভাবে জড়িয়ে থাকলেও, এর ইতিহাস আজও অনেকের অজানা।
অসমের বিভিন্ন এলাকায় এই পুজো বেশি হলেও, এবার আলিপুরদুয়ারের চিলাপাতায় পশ্চিমবঙ্গ স্টেট অল বাথৌ ধর্ম কমিটির পরিচালনায় এই মহাসভার আয়োজন করা হয়েছে।
বরাই বাথৌ পুজো ও সিজৌ গাছের গুরুত্ব:
বোরো জনজাতির এই পুজোতে অনেক দেবদেবীর পাশাপাশি বরাই বাথৌ প্রধান দেবতা হিসেবে পূজিত হন। উৎসবের মূল আকর্ষণ হলো ‘সিজৌ’ গাছটিকে কেন্দ্র করে বরাই বাথৌ পুজো। বরাই বাথৌকে সকল শক্তির উৎস হিসেবে পুজো করা হয়, যা প্রকৃতির প্রতি শ্রদ্ধাবোধ এবং পাঁচটি মৌলিক উপাদানের ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে।
এছাড়াও এই উৎসবে আইলেং, আগ্রং, খোইলা, কার্জি, রাজখন্ডা, কং রাজা, আলাই খুংরি, ভান্দ্রি, রণচণ্ডী, বুলি বুড়ি, লাওখার মতো দেবদেবীরও পুজো করা হয়।
নতুন প্রজন্মকে সংস্কৃতি জানাতে সেমিনার:
এই উৎসব আয়োজনের পাশাপাশি উদ্যোক্তারা একটি বিশেষ সেমিনারেরও ব্যবস্থা করেছেন। তাঁদের মতে, মেচ এবং বোরো জনজাতির নতুন প্রজন্মের ছেলেমেয়েদের এই পুজোর ইতিহাস সম্পর্কে সম্যক ধারণা কম। তাঁদের এই ঐতিহ্যবাহী পুজো ও নিজেদের সংস্কৃতি সম্পর্কে জ্ঞান দিতে পুজোর পাশাপাশি আলোচনা সভা চলছে।
উদ্যোক্তা নীরজ কার্জি জানান, “শুধু নতুন প্রজন্ম নয়, আলোচনা সভা ও উৎসবে এই জনজাতির আমজনতা উপস্থিত রয়েছেন। যারা পুরোহিত, তাঁরাও রয়েছেন। নিজেদের সংস্কৃতি সম্পর্কে নানা আলাপ-আলোচনা চলছে, তথ্য আদান-প্রদান হচ্ছে।”