প্রকৃতির রোষে বিপর্যস্ত উত্তরাখণ্ডে ফের বিপর্যয়। উত্তরকাশীতে মেঘভাঙা বৃষ্টি ও হরপা বানের পর এবার পাউরি গাড়োয়ালের পাবো ব্লকের সাইনজি গ্রামে মেঘ ভেঙে বিপুল ভূমিধস নেমে এসেছে। এই ঘটনায় কমপক্ষে দুই মহিলার মৃত্যু হয়েছে এবং একাধিক শ্রমিক নিখোঁজ রয়েছেন। অন্যদিকে, গত মঙ্গলবারের উত্তরকাশীর বিপর্যয়ের পর থেকে কেরালা থেকে আসা ২৮ জন পর্যটকেরও খোঁজ মিলছে না।
সাইণজি গ্রামে ভূমিধস ও শ্রমিক নিখোঁজ:
বুধবার সকাল ১১টা নাগাদ সাইণজি গ্রামের কাছে মেঘভাঙা বৃষ্টি শুরু হয়, যার ফলে বিশাল ভূমিধস নামে। এতে একাধিক কৃষিজমি ধ্বংস হয়ে গেছে এবং একটি ফুটব্রিজও ভেসে গেছে। স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, এই ঘটনায় পাঁচজন নেপালী শ্রমিকের কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।
গাড়োয়ালের জেলা ম্যাজিস্ট্রেট স্বাতী এস ভাদোরিয়া জানিয়েছেন, “গত রাত থেকে জেলায় প্রবল বৃষ্টি হচ্ছে, যার ফলে অনেক জায়গায় ভূমিধস হয়েছে। বহু রাস্তা বন্ধ হয়ে গেছে। মেঘভাঙা বৃষ্টিতে অনেক ঘরবাড়িও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।” তিনি আরও জানান, কালগাদির কাছে ভেঙে পড়া জাতীয় সড়কের ওপর একটি ব্রেইলি ব্রিজ তৈরির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মৃত দুই মহিলার পরিচয়:
পাবো ব্লকের বুরাসি গ্রামে ধ্বংসস্তূপের নিচে থেকে মৃত দুই মহিলার দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতরা হলেন বিমলা দেবী এবং আশা দেবী। বুরাসি গ্রামের একটি গোয়ালঘরও ভূমিধসের কারণে চাপা পড়ে গেছে, যেখানে প্রচুর গবাদি পশুর আটকে থাকার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
নিখোঁজ ২৮ পর্যটক:
সংবাদ সংস্থা সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার উত্তরকাশীতে বিপর্যয়ের পর থেকে মোট ২৮ জন পর্যটকের খোঁজ মিলছে না। এর মধ্যে ২০ জন কেরালা থেকে এলেও বর্তমানে মহারাষ্ট্রে থাকেন। হরিদ্বারের একটি ট্রাভেল এজেন্সির মাধ্যমে তারা ঘুরতে গিয়েছিলেন। নিখোঁজদের মধ্যে এক দম্পতিও রয়েছেন। তাদের ছেলে জানান, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে আটটায় শেষবার তাদের সঙ্গে কথা হয়েছিল, যখন তারা উত্তরকাশী থেকে গঙ্গোত্রীর দিকে যাচ্ছিলেন। এর পর থেকে তাদের সঙ্গে আর কোনো যোগাযোগ করা যায়নি।
মঙ্গলবার উত্তরকাশীর ধরালী গ্রামে এবং সুখি টপেও মেঘভাঙা বৃষ্টি হয়েছিল, যার ফলে হরপা বানে ধরালী গ্রাম বিধ্বস্ত হয়। এখনও পর্যন্ত সেখানে পাঁচজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে এবং মৃত্যুর সংখ্যা আরও বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।