পুজো শেষ, কিন্তু বৃষ্টি থামার কোনো লক্ষণ নেই। অক্টোবর মাসে বর্ষা বিদায় পর্বের পরও দেশের একাধিক রাজ্যে তুমুল দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার পূর্বাভাস জারি করেছে ভারতের মৌসম ভবন (IMD)। আরব সাগরে একটি শক্তিশালী ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হওয়ায় দক্ষিণ ভারত এবং সংলগ্ন উপকূলবর্তী রাজ্যগুলিতে ধস ও বন্যার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে আগেভাগেই সতর্কতা জারি করল হাওয়া অফিস।
আরব সাগরে ঘূর্ণাবর্ত, ভোগান্তি চরমে:
হাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে আরব সাগরের উপরে একটি শক্তিশালী ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হচ্ছে। এই ঘূর্ণাবর্তের প্রভাবে কেরল, কর্ণাটক, তামিলনাড়ু, ওড়িশা, অন্ধ্রপ্রদেশ এবং তেলেঙ্গানায় চলতি সপ্তাহে একটানা ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে।
আবহাওয়া দফতরের সতর্কতা অনুযায়ী, এই রাজ্যগুলিতে বজ্রবিদ্যুৎ সহ ভারী বৃষ্টির পাশাপাশি ঘণ্টায় ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার বেগে দমকা ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে। এই পরিস্থিতিতে উপরোক্ত রাজ্যগুলিতে জারি করা হয়েছে হলুদ সতর্কতা (Yellow Alert)।
আবহাওয়া বিশেষজ্ঞদের মতে, ঘূর্ণাবর্তের জেরে তুলনামূলকভাবে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তি পোহাতে হবে কেরলকে। এই রাজ্যে বৃষ্টির দাপট অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় বেশি থাকবে। আগামী ১৮ অক্টোবর পর্যন্ত কেরলে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
এছাড়াও, আগামী ১৬ অক্টোবর পর্যন্ত ওড়িশা, বিদর্ভ এবং ছত্তিশগড়ে ভারী বৃষ্টির সঙ্গে ঝোড়ো হাওয়ার সতর্কতা জারি রয়েছে।
উত্তর-পূর্বেও বৃষ্টি, তবে বদল উত্তরে:
দক্ষিণ ভারতের পাশাপাশি উত্তর পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলিতেও চলতি সপ্তাহে প্রবল বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। আগামী কয়েকদিনে অসম, মেঘালয়, নাগাল্যান্ড, মণিপুর, মিজোরাম ও ত্রিপুরায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি ও ঝোড়ো হাওয়ার সতর্কতা জারি করেছে হাওয়া অফিস।
তবে এর বিপরীতে উত্তর ভারতের রাজ্যগুলিতে আবহাওয়ার বদল হতে শুরু করেছে। দিল্লি-এনসিআর সহ উত্তর ভারতের রাজ্যগুলিতে তাপমাত্রার পারদ নিম্নমুখী থাকবে এবং শুষ্ক আবহাওয়াই থাকবে। যদিও সকালে রোদ ঝলমলে থাকলেও, সন্ধ্যার পর হালকা শীতের আমেজ অনুভব হতে পারে। গত সপ্তাহেই জম্মু ও কাশ্মীর, হিমাচল প্রদেশ এবং উত্তরাখণ্ডে মরশুমের প্রথম তুষারপাতের সাক্ষী থেকেছে।
অক্টোবরে রেকর্ড বৃষ্টি, শীত নিয়ে ইঙ্গিত:
মৌসম ভবনের ডিরেক্টর জেনারেল মৃত্যুঞ্জয় মহাপাত্র জানিয়েছেন, চলতি বছর অক্টোবরেও স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে দেশের অধিকাংশ রাজ্যেই। তাঁর মতে, মধ্য ও দক্ষিণ ভারতের রাজ্যগুলি স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি বৃষ্টির সাক্ষী থাকতে পারে।
পাশাপাশি, তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন যে ক্রমেই লা নিনা সক্রিয় হলে, তাপমাত্রার পারদ কমতে পারে। সেক্ষেত্রে এ বছর আগেভাগেই শীতের আমেজ পাওয়া যেতে পারে।