পরিবেশবান্ধব উদ্যোগ হিসেবে সরকার গর্বের সঙ্গে ২০ শতাংশ ইথানল-যুক্ত পেট্রোল বা E20 জ্বালানি চালু করলেও, মাঠের বাস্তবতা বলছে ভিন্ন কথা। সাম্প্রতিক এক দেশব্যাপী জরিপে দেখা গেছে, এই নতুন মিশ্র জ্বালানির কারণে দেশে গাড়ির মাইলেজ উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পাচ্ছে এবং রক্ষণাবেক্ষণ খরচ বেড়ে যাওয়ায় এটি এখন সাধারণ মানুষের কাছে মাথাব্যথার কারণ।
LocalCircles পরিচালিত এই সমীক্ষায় দেশের ৩২৩টি জেলা থেকে প্রায় ৩৬,০০০ গাড়িচালক অংশ নেন। এদের মধ্যে অধিকাংশ পুরোনো গাড়ির মালিকরা E20 ব্যবহারের খারাপ অভিজ্ঞতা তুলে ধরেছেন।
২০২২ সালে বা তার আগে কেনা গাড়ির মালিকদের ৮০% জানিয়েছেন যে E20 জ্বালানি ব্যবহারের ফলে তাদের গাড়ির জ্বালানি দক্ষতা বা মাইলেজ কমেছে। আগস্ট মাসে এই সংখ্যা ছিল ৬৭%, যা অক্টোবরে আরও বেড়েছে।
প্রায় ৫২% উত্তরদাতা বলেছেন যে তাদের গাড়ির রক্ষণাবেক্ষণ খরচ বেড়েছে, যা আগের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ।
২০২৫ সালের এপ্রিল মাসে দেশব্যাপী E20 বাধ্যতামূলক হওয়ার পর থেকেই পুরোনো গাড়ি ও দুই চাকার যানবাহনে বেশি সমস্যা দেখা দিচ্ছে।
চালক ও মেকানিকদের অভিযোগের পাহাড়
E20 জ্বালানি ব্যবহারের পর থেকে চালকদের মধ্যে নানা ধরনের অভিযোগ বাড়ছে। অনেকে বলছেন, সকালে গাড়ি স্টার্ট নিতে সমস্যা, ইঞ্জিনে অস্বাভাবিক শব্দ বা ঝাঁকুনি দেখা দিচ্ছে, এবং জ্বালানি খরচ বেড়েছে।
চেন্নাইয়ের এক গাড়ি মালিক অভিযোগ করেছেন, E20 জ্বালানির কারণে তাঁর গাড়ির ইঞ্জিন সম্পূর্ণ বিকল হয়ে গেছে, যার মেরামতে প্রায় ৪ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে। দেশের বিভিন্ন শহরের মেকানিকরাও জানাচ্ছেন যে এপ্রিল মাস থেকে জ্বালানি-সম্পর্কিত অভিযোগ প্রায় ৪০% বেড়েছে।
যদিও সরকার E20 উদ্যোগের মাধ্যমে পরিচ্ছন্ন শক্তি প্রচার এবং ইথানল আখ থেকে তৈরি হওয়ায় কৃষকের আয় বৃদ্ধির দাবি করছে, তবে সাধারণ গাড়ি মালিকরা বলছেন, এই পরিবর্তন তাদের উপর অতিরিক্ত আর্থিক চাপ সৃষ্টি করছে।