প্রায় চার বছর পর ভারতে এলেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন (Vladimir Putin)। ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর এটাই তাঁর প্রথম ভারত সফর। বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi) আয়োজিত একটি ব্যক্তিগত নৈশভোজের মাধ্যমে শুরু হচ্ছে তাঁর এই বহু প্রতীক্ষিত সফর। পুতিন শেষবার ভারতে এসেছিলেন ২০২১ সালে।
এই সফর ভারত এবং রাশিয়ার নেতৃত্বের জন্য দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের অগ্রগতি পর্যালোচনা করার, ‘বিশেষ ও সুবিধাপ্রাপ্ত কৌশলগত অংশীদারিত্ব’ জোরদার করার জন্য একটি ভিশন তৈরির এবং পারস্পরিক স্বার্থের আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক বিষয় নিয়ে মতবিনিময় করার সুযোগ দেবে।
📸 ২১ বছরের পুরোনো সম্পর্ক: যখন মোদি ছিলেন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী
রাশিয়ান প্রধানমন্ত্রী ভ্লাদিমির পুতিনের এই প্রতীক্ষিত সফর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে তাঁর বহু বছরের পুরানো বন্ধুত্বের কথা মনে করিয়ে দেয়। এই সম্পর্ক প্রায় ২৫ বছরের পুরনো।
-
২০০১ সালের মস্কো সফর: ২০০১ সালে প্রধানমন্ত্রী মোদি, যিনি তখন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ীর সঙ্গে ভারত-রাশিয়া শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে মস্কো গিয়েছিলেন।
-
ভাইরাল ছবি: সম্প্রতি তাঁদের এই বৈঠকের আগে সামাজিক মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী মোদি এবং পুতিনের পুরোনো ছবি ভাইরাল হয়েছে। একটি ছবিতে মোদিকে বাজপেয়ীর পাশে বসে নথিতে স্বাক্ষর করতে দেখা যায়, অন্যটিতে তৎকালীন বিদেশমন্ত্রী যশবন্ত সিং-এর সঙ্গে মোদিকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।
-
গুজরাট-রাশিয়া সহযোগিতা: ২০০১ সালের সেই সফরে, মোদি গুজরাট এবং রাশিয়ার আস্ত্রাখান প্রদেশের মধ্যে পেট্রোকেমিক্যাল, হাইড্রোকার্বন, বাণিজ্য, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, শিক্ষা, পর্যটন এবং সংস্কৃতি সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতার জন্য একটি প্রোটোকলে স্বাক্ষর করেছিলেন।
-
স্মৃতিচারণ: ২০১৯ সালে প্রধানমন্ত্রী মোদি তাঁর ২০০১ সালের মস্কো সফরের স্মৃতিচারণ করে বলেন, পুতিন তাঁকে খুব সম্মান দিয়েছিলেন, যদিও তিনি আন্তর্জাতিক মঞ্চে নতুন এবং একটি ছোট রাজ্য থেকে এসেছিলেন। মোদি বলেছিলেন, “পুতিন আমাকে এমন অনুভব করতে দেননি যে আমি কম গুরুত্বপূর্ণ; যে আমি একটি ছোট রাজ্য থেকে এসেছি বা আমি নতুন। তিনি আমাকে বন্ধুত্বপূর্ণভাবে, একজন বন্ধুর মতো আচরণ করেছিলেন। এটিই বন্ধুত্বের দরজা খুলে দিয়েছিল।”
🗓️ পুতিনের ২ দিনের সফরের সূচি:
পুতিন তাঁর এই দুই দিনের ভারত সফরে ২৩তম ভারত-রাশিয়া বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন। বৃহস্পতিবার নয়াদিল্লিতে আগমনের পর প্রধানমন্ত্রী মোদি তাঁর সম্মানে একটি ব্যক্তিগত নৈশভোজের আয়োজন করবেন।
মূল কর্মসূচি শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর)।
-
শুক্রবার সকালে পুতিনকে রাষ্ট্রপতি ভবনে আনুষ্ঠানিক অভ্যর্থনা এবং তিন বাহিনীর গার্ড অফ অনার দেওয়া হবে।
-
এরপর তিনি রাজঘাটে মহাত্মা গান্ধীর স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানাবেন।
-
দুই নেতা হায়দরাবাদ হাউসে শীর্ষ পর্যায়ের আলোচনা করবেন এবং একটি ব্যবসায়িক ইভেন্টেও অংশ নেবেন।
-
এই কর্মসূচির পরে, পুতিন রাষ্ট্রপতি ভবনে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন এবং রাত ৯টা নাগাদ দিল্লি থেকে রওনা হবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
দুই দেশের মধ্যেকার এই বৈঠক বর্তমান ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে সামরিক সহযোগিতা এবং অর্থনৈতিক লেনদেন বাড়ানোর ক্ষেত্রে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হতে চলেছে।