ক্যানাডীয় জাতীয়তাবাদী অ্যাক্টিভিস্ট স্টেফান মলিনিউক্স (Stefan Molyneux) তাঁর এক চাঞ্চল্যকর ‘কন্সপিরেসি থিওরি’ দিয়ে ফের বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন। এবার তিনি দাবি করেছেন যে, ইংরেজদের ঔপনিবেশিকতা বলে নাকি কিছুই ছিল না! মলিনিউক্সের এই বিতর্কিত পোস্টটি শেয়ার করেছেন টেসলা-প্রধান ইলন মাস্ক (Elon Musk), যার জেরে নেটদুনিয়ায় নিন্দার ঝড় উঠেছে।
কী দাবি করেছেন মলিনিউক্স?
ইতিহাসকে সম্পূর্ণ বিকৃত করার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে ক্ষোভে ফুঁসছেন ভারতীয়রা। মলিনিউক্স তাঁর পোস্টে ভারতের উপর দীর্ঘ ২০০ বছরের নৃশংস অত্যাচারের ইতিহাসকে সম্পূর্ণ ‘হোয়াইট ওয়াশ’ করার চেষ্টা করেছেন। তাঁর বিতর্কিত যুক্তিটি ছিল:
“যদি ভারতীয়রা ইংল্যান্ডে পা রেখে ইংরেজ হয়ে যায়, তাহলে যারা ভারতে পা রেখেছিল, তারা ভারতীয় হয়ে যায়। অতএব ইংরেজরা ভারত শাসন করেনি। ‘উপনিবেশবাদ’ বলে কিছু নেই।”
মলিনিউক্সের এই পোস্টে ইতিমধ্যেই প্রায় ১৮ মিলিয়ন ভিউ হয়েছে, আর ইলন মাস্কের রিপোস্টটিতেও ভিউ ছাড়িয়েছে ১ কোটি ৬৭ লক্ষ। এর আগে এই অ্যাক্টিভিস্ট কৃষ্ণাঙ্গ এবং অন্যান্য অ-শ্বেতাঙ্গদের বুদ্ধিমত্তার দিক থেকে শ্বেতাঙ্গদের চেয়ে নিকৃষ্ট বলেও দাবি করেছিলেন।
ভারতীয়দের তীব্র নিন্দা:
মাস্ক এবং মলিনিউক্সের এই পোস্ট ঘিরে নিন্দার ঝড় উঠেছে আন্তর্জাতিক স্তরে। যুক্তরাজ্য-স্থিত লেখক এবং রয়েল এশিয়াটিক সোসাইটির সদস্য সতীশ কে শর্মা বলেছেন, “২২৭ মিলিয়ন ফলোয়ার বিশিষ্ট কোনো মানুষের এরকম বিভ্রান্তিকর পোস্টকে কোনোভাবেই উপেক্ষা করা যায় না। ‘বর্ণবিদ্বেষী’ বলে পরিচিত মলিনিউক্স এই পোস্টের মাধ্যমে ঔপনিবেশিকতাকে বৈধতা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন।”
বোস্টন-স্থিত এক ভারতীয় তীব্র নিন্দা করে বলেন, “এটা ভারতীয় সহ অন্যান্য একসময় ব্রিটিশ উপনিবেশ থাকা অন্যান্য দেশের প্রতি ঘোরতর অপমান।” একজন এক্স ব্যবহারকারী এই যুক্তির বিরোধিতা করে লেখেন, “ভারতীয়রা ইংল্যান্ডে রাজত্ব করে দেশটিকে পঙ্গু করে দিতে আসেনি। এমনকি ভারতীয়রা ব্রিটিশ সমাজে একীভূতও হয়নি।”
এই ধরনের মন্তব্য ঔপনিবেশিকতার ফলে ভারতসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশে ব্রিটিশদের অত্যাচার, দাসত্ব এবং লুটতরাজের যে রক্তাক্ত ইতিহাস রয়েছে, তা মুছে ফেলার এক ঘৃণ্য প্রচেষ্টা বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।