হাতির তাণ্ডবে বারবার ফসল নষ্টের শিকার হচ্ছেন আলিপুরদুয়ার জেলার কৃষকরা। এই সমস্যা মোকাবিলায় এবার অভিনব উদ্যোগ নিয়েছে জেলা কৃষি দফতর। কৃষকদের চিরাচরিত চাষবাসের পরিবর্তে ফল চাষে উৎসাহিত করা হচ্ছে, বিশেষ করে ড্রাগন ফ্রুট, মাল্টা, মুসম্বি ও কমলার মতো ফলের চারা দিয়ে সহায়তা করা হচ্ছে।
জেলা কৃষি দফতরের আধিকারিকরা জানান, ভুটান সীমান্ত লাগোয়া জয়গাঁ, কালচিনি এবং কুমারগ্রামের মতো যে সমস্ত এলাকায় হাতির আনাগোনা বেশি, সেখানে কৃষকদের ফল চাষের দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে ৩০ জন কৃষককে বেছে নেওয়া হয়েছে এবং তাঁদের মোট ৩০,৫০০টি ফলের চারা বিতরণ করা হয়েছে।
এই ফলগুলি বেছে নেওয়ার পিছনে একটি বিশেষ কারণ রয়েছে। মাল্টা ও মুসম্বির মতো ফলের গাছে কাঁটা থাকে, যা সাধারণত হাতিদের জন্য বিরক্তির কারণ। অন্যদিকে, ড্রাগন ফ্রুট হাতির মুখের রুচিসম্মত নয়, তাই তারা এই ফল নষ্ট করার সম্ভাবনা কম। জেলা কৃষি দফতরের আধিকারিকরা মনে করছেন, এই কৌশল হাতির তাণ্ডব থেকে ফসল বাঁচানোর একটি কার্যকর উপায় হতে পারে।
এছাড়াও, এই এলাকার আবহাওয়া এবং মাটি ফল চাষের জন্য খুবই উপযুক্ত। একসময় এই অঞ্চলে কমলালেবুর চাষ হত, যা ৮০-র দশক থেকে বন্ধ হয়ে যায়। কৃষি আধিকারিক রজত চট্টোপাধ্যায় জানান, “আমরা আবার সেই ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে চাই। কৃষকদের চারা দেওয়ার পাশাপাশি ফল চাষের সঠিক পদ্ধতি ও পরিচর্যা সম্পর্কে প্রশিক্ষণও দেওয়া হচ্ছে।”
উদ্যান-পালন বিভাগও এই উদ্যোগে হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। এই পদক্ষেপের মাধ্যমে একদিকে যেমন হাতির আক্রমণের হাত থেকে চাষিদের বাঁচানো যাবে, তেমনি ফল চাষ করে তাঁরা আর্থিকভাবেও লাভবান হতে পারবেন বলে আশা করা হচ্ছে।