আমেরিকায় ওষুধ আমদানি নিয়ে বিরাট নাটক! ট্রাম্পের শুল্ক কি কেবলই ‘হুমকি’? দাম কমানো নিয়ে চলছে গোপন আলোচনা

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দেওয়া ব্র্যান্ডেড ও পেটেন্টযুক্ত ওষুধ আমদানিতে ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুঁশিয়ারি ১ অক্টোবর, ২০২৫-এর সময়সীমা পেরোলেও কার্যকর হয়নি। এই শুল্কের উদ্দেশ্য ছিল বিদেশি ওষুধ কোম্পানিগুলোর ওপর নির্ভরতা কমিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে দেশীয় উৎপাদনকে উৎসাহিত করা। কিন্তু কেন সময় পেরিয়ে গেলেও ট্রাম্প প্রশাসন পিছু হটল? হোয়াইট হাউস এবং বিশেষজ্ঞ মহলের সূত্রে উঠে আসছে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ কারণ।

শুল্ক বাস্তবায়নে দেরির আসল কারণ
ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, শুল্ক আরোপের আগে তারা ওষুধ কোম্পানিগুলোর সঙ্গে আলোচনা করতে চান। এই আলোচনার মূল লক্ষ্য হলো, কোম্পানিগুলো যাতে তাদের উৎপাদন আবার যুক্তরাষ্ট্রে ফিরিয়ে আনে এবং ওষুধের দাম উল্লেখযোগ্যভাবে কমায়।

হোয়াইট হাউস স্পষ্ট করেছে যে, এই মুহূর্তে বেশ কয়েকটি কোম্পানির দামের প্রস্তাব বিবেচনা করা হচ্ছে। তাই আলোচনা চলমান থাকায় শুল্ক বাস্তবায়ন আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে। তবে ভবিষ্যতে এটি কার্যকর করা হতে পারে—ফলে হুমকি সম্পূর্ণরূপে এড়ানো যায়নি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই শুল্ক কার্যকর হলে রোগীদের জন্য আমদানি করা ওষুধের দাম বহু গুণ বাড়বে এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সম্পর্কও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

ফাইজারের ৭ হাজার কোটি ডলারের চুক্তি
এদিকে, পরিস্থিতি নরম হওয়ার ইঙ্গিত দিয়ে ওষুধ প্রস্তুতকারী জায়ান্ট ফাইজার মার্কিন সরকারের সঙ্গে একটি বড় চুক্তির অংশ হিসাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ৭ হাজার কোটি ডলার বিনিয়োগের ঘোষণা করেছে। একই সঙ্গে, তারা ওষুধের দাম কমানোর প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে। এটি স্পষ্টতই ইঙ্গিত দিচ্ছে যে, বড় সংস্থাগুলো ট্রাম্প প্রশাসনের চাপে যুক্তরাষ্ট্রে তাদের কার্যক্রম সম্প্রসারণ করতে চাইছে।

আসছে ট্রাম্পের নিজস্ব ওয়েবসাইট ‘TrumpRx’
সংবাদ মাধ্যমের রিপোর্ট অনুযায়ী, ট্রাম্প প্রশাসন আরও একটি বড় পদক্ষেপের প্রস্তুতি নিচ্ছে। খুব শীঘ্রই একটি নতুন ওয়েবসাইট চালু করার পরিকল্পনা চলছে, যার নাম হতে পারে “TrumpRx”।

এই ওয়েবসাইটটি মূলত একটি সার্চ প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করবে। এর মাধ্যমে রোগীরা সহজেই খুঁজে নিতে পারবেন যে, কোন প্ল্যাটফর্মে কোন ছাড়যুক্ত ওষুধ বিক্রি হচ্ছে এবং সরাসরি কোম্পানি থেকে ছাড়যুক্ত ওষুধ কিনতে পারবেন। ট্রাম্প প্রশাসন মনে করছে, এই ধরনের পদক্ষেপ ওষুধের দাম নিয়ন্ত্রণে আনতে আরও বেশি সাহায্য করবে।

আমদানি শুল্কের কঠোর হুঁশিয়ারি আপাতত আলোচনার স্তরে আটকে থাকলেও, দেশীয় উৎপাদন বৃদ্ধি এবং ওষুধের দাম কমানোর জন্য ট্রাম্প প্রশাসনের এই কৌশল বাজারে বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy