কোচবিহারে নিজের কনভয়ে হামলার শিকার হয়ে বিস্ফোরক দাবি করলেন রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি এই হামলার জন্য সরাসরি মন্ত্রী উদয়ন গুহর নেতৃত্বকে দায়ী করেছেন। মঙ্গলবার কোচবিহারে এসপি অফিস অভিযানের আগে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে শুভেন্দু এই মন্তব্য করেন।
শুভেন্দু অধিকারীর কনভয়ে বাঁশ, লাঠি এবং ইট দিয়ে হামলার অভিযোগ উঠেছে, যেখানে বেশ কয়েকটি গাড়িও ভাঙচুর করা হয়েছে। এ ধরনের হামলার ঘটনায় শুভেন্দু তাঁর ‘জেড’ ক্যাটাগরির নিরাপত্তা থাকা সত্ত্বেও কেন হামলা হলো, সেই প্রশ্ন তুলেছেন।
কোচবিহারের সভা থেকে তিনি বলেন, “এই হামলা হবে খবর ছিল। আমি গতকাল গভীর রাতে রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বসু, রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ, রাজ্যের স্বরাষ্ট্র সচিব এবং ডিজিপি রাজীব কুমারকে মেইল করে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজা শেখর মান্থার ২০২১ সালের নির্দেশ জানিয়ে সমস্ত তথ্য দিয়েছিলাম।”
শুভেন্দু জানান, তিনি একটি ভাড়া করা গাড়িতে করে বাগডোগরা থেকে কোচবিহারের উদ্দেশে যাচ্ছিলেন। ফালাকাটা পেরনোর পর নিশীথ প্রামাণিক তাঁকে ফোন করে জানান যে, “পুণ্ডিবাড়িতে পাথর ছুড়বে, খাগড়াবাড়িতে গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেবে।” এরপর নিশীথ তাঁকে তাঁর সিআইএসএফের বুলেটপ্রুফ গাড়িতে চড়ার পরামর্শ দেন, যা তাঁর জীবন বাঁচিয়েছে বলে শুভেন্দু দাবি করেন।
শুভেন্দু অধিকারী এই হামলায় রোহিঙ্গা এবং বাংলাদেশি সংখ্যালঘুদের জড়িত থাকার বিস্ফোরক অভিযোগ তুলেছেন। তাঁর কথায়, “আমি যাদের দেখলাম, তাদের ৯০ ভাগ রোহিঙ্গা, বাংলাদেশি মুসলমান, যাদের আমরা ভারত থেকে তাড়াতে চাই।” তিনি আরও বলেন, কোচবিহার যেহেতু বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী এলাকা, তাই সেখানে অবৈধভাবে বাংলাদেশি প্রবেশ করানো হচ্ছে। ভোটার বৃদ্ধির পরিসংখ্যান দিয়ে তিনি তাঁর অভিযোগের পক্ষে যুক্তি দেন। তিনি বলেন, “গোটা ভারতে ভোটার বেড়েছে ৭ শতাংশ, কোচবিহারে ভোটার বেড়েছে ২৬ শতাংশ। শীতলকুচিতে ২৯ শতাংশ এবং দিনহাটায় ২৮ শতাংশ।”
শুভেন্দু বলেন, “আমি যদি বুলেটপ্রুফ গাড়িতে না থাকতাম, তাহলে আপনারা আজ ফুল নিয়ে আমার মৃতদেহের সামনে দাঁড়াতেন।” এই মন্তব্যের মাধ্যমে তিনি এই হামলার তীব্রতা বোঝাতে চেয়েছেন। সোমবার শুভেন্দু অধিকারীর আইনজীবী রাজ্য পুলিশকে আদালতের নির্দেশ কার্যকর করার জন্য চিঠি দিলেও, তা কার্যকর হয়নি বলেই তিনি অভিযোগ করেছেন।