সম্প্রতি এক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞের ইনস্টাগ্রাম পোস্টে সামনে এসেছে এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা, যা সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। কিশান সিংহ নামের এক মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও সম্পর্ক পরামর্শদাতা তার এক ক্লায়েন্টের ব্যক্তিগত জীবনের গল্প শেয়ার করেছেন, যা সমাজের নৈতিকতা ও আইনি কাঠামো নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। গোপনীয়তা রক্ষার জন্য যদিও গল্পের নাম ও স্থান পরিবর্তন করা হয়েছে।
গল্পটি শুরু হয় অনলাইন ম্যাট্রিমনিয়াল সাইটে পরিচিত হওয়া একটি দম্পতির সুখী সম্পর্কের মধ্য দিয়ে। বিয়ের পর দ্রুত সুষমা নামের স্ত্রী গর্ভবতী হন। সব ঠিকঠাকই চলছিল, কিন্তু বিয়ের কয়েক মাস পর একটি ফোনকল সবকিছু পাল্টে দেয়।
কিশানের ক্লায়েন্ট জানান, তার বিয়ের আগে সুষমার বাবা কিছু শর্ত দিয়েছিলেন, যেমন ছেলের সরকারি চাকরি ও মাসিক ১ লক্ষ টাকার বেশি আয় থাকতে হবে। সেইসব শর্ত মেনে খুব সহজেই তাদের বিয়ে হয়ে যায়। কিন্তু চার-পাঁচ মাস পর অঙ্কিত নামের এক ব্যক্তি ফোন করে দাবি করেন, তিনি সুষমার প্রাক্তন প্রেমিক। অঙ্কিতের দাবি, বিয়ের আগের দিনও সুষমা তাঁর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেন এবং বলেছিলেন যে তিনি তাঁরই সন্তান চান, যদিও তাঁকে অন্য কাউকে বিয়ে করতে হয়।
এই কথা শুনে ওই যুবক অঙ্কিতের সঙ্গে দেখা করেন। অঙ্কিত কিছু অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবিও দেখান, যা ছিল এক হোটেলের রুমে তোলা। সবচেয়ে অবাক করার বিষয় ছিল, সুষমার পরিবারও এই সম্পর্কের কথা জানত, কিন্তু তারা যুবকের কাছে সবকিছু গোপন রেখেছিল।
যখন যুবক সুষমার সঙ্গে এই বিষয়ে কথা বলেন, সুষমা কান্নায় ভেঙে পড়েন এবং সব স্বীকার করেন। তিনি বলেন যে, বিয়ের আগের দিন অঙ্কিতের অনুরোধে তিনি তার সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন এবং গর্ভের সন্তানটি অঙ্কিতেরই। তিনি এটিকে তার জীবনের একটি ‘বড় ভুল’ বলে উল্লেখ করেন। এই সত্য জানতে পেরে হতভম্ব হয়ে যান ওই যুবক। তিনি এখন কী করবেন, তা নিয়ে সম্পূর্ণ দিশাহীন হয়ে পড়েছেন।
এই ঘটনা সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ার পর বহু মানুষ বিভিন্ন ধরনের মন্তব্য করেছেন। অনেকেই মনে করছেন, এটি একটি প্রতারণার ঘটনা এবং ওই যুবকের আইনি পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। কেউ কেউ ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে সত্য প্রমাণের কথা বলেছেন, কিন্তু আইনি বিশেষজ্ঞরা উল্লেখ করেছেন যে, ভারতীয় এভিডেন্স অ্যাক্ট, ১৮৭২ এর ১১২ ধারা অনুযায়ী, বৈধ বিয়ের সময় জন্ম নেওয়া সন্তানকে স্বামীর সন্তান বলেই ধরে নেওয়া হয়, যদিও ডিএনএ রিপোর্টে ভিন্ন প্রমাণ থাকে। এই ধরনের ঘটনা সমাজে সম্পর্কের বিশ্বাস এবং আইন ব্যবস্থার কার্যকারিতা নিয়ে গভীর আলোচনা তৈরি করেছে