আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজ্য সরকার নতুন জনমুখী প্রকল্প ‘আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান’ শুরু করতে চলেছে। আগামীকাল, ২রা আগস্ট, শনিবার থেকে এই কর্মসূচি আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হবে, যা ‘দুয়ারে সরকার’-এর আদলে রাজ্যের স্থানীয় সমস্যা সমাধানের উপর জোর দেবে। এই প্রকল্পকে সফল করতে রাজ্য প্রশাসন কোমর বেঁধে নেমেছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কিছুদিন আগেই এই প্রকল্পের ঘোষণা করেছিলেন।
প্রতিটি বুথে উন্নয়নের ছোঁয়া: ১৫টি অগ্রাধিকারমূলক ক্ষেত্র
‘আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান’ কর্মসূচির অধীনে ১৫টি কাজকে বিশেষভাবে অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা বলা হয়েছে রাজ্যের পক্ষ থেকে। নবান্নের সর্বশেষ নির্দেশিকা অনুযায়ী, রাস্তা মেরামতির কাজকেও এই কর্মসূচির আওতায় নতুন করে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। প্রতিটি তিনটি বুথ নিয়ে একটি করে শিবির আয়োজন করবে স্থানীয় প্রশাসন, যেখানে সাধারণ মানুষ তাদের সমস্যা ও অভিযোগ জানাতে পারবেন।
এই প্রকল্পের অধীনে যে কাজগুলিকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে তার মধ্যে রয়েছে: নিকাশি ব্যবস্থার উন্নতি, বিশুদ্ধ জল সরবরাহ, এলাকায় এলাকায় রাস্তার আলোর ব্যবস্থা, প্রতিটি বুথে শৌচাগার নির্মাণ, আইসিডিএস কেন্দ্রগুলির পরিকাঠামোর মান উন্নয়ন, প্রাথমিক স্কুলগুলির পরিকাঠামো সংক্রান্ত সমস্যার সমাধান, পুকুর ও জলাশয়গুলির সৌন্দর্যায়ন ও ঘাটগুলির সংস্কার, এবং বাজারগুলির পরিকাঠামোর উন্নয়ন। এছাড়াও, এই ১৫টি কাজের বাইরে অন্য কোনো অভিযোগ এলেও তার দ্রুত নিষ্পত্তি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বিপুল বাজেট ও প্রশাসনিক নজরদারি
এই জনমুখী প্রকল্পের জন্য মুখ্যমন্ত্রী ইতিমধ্যেই বুথ ভিত্তিক ১০ লক্ষ টাকা করে বরাদ্দ করার কথা ঘোষণা করেছেন। সামগ্রিকভাবে, এই প্রকল্পের অধীনে ৮ হাজার কোটি টাকারও বেশি অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে, যা রাজ্যের স্থানীয় স্তরের উন্নয়নে এক বিশাল বিনিয়োগ।
‘আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান’ কর্মসূচিটি যাতে সঠিকভাবে এবং স্বচ্ছতার সঙ্গে রূপায়িত হয়, তা নিশ্চিত করতে রাজ্য সরকার ৪০ জন সিনিয়র আইএএস অফিসারকে বিশেষ দায়িত্ব দিয়েছে। এই উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা মহকুমা ধরে ধরে প্রকল্পের কাজ তদারকি করবেন এবং জেলাশাসকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও নির্দেশনা দেবেন। একাধিক দফতরের প্রধান সচিব ও অতিরিক্ত প্রধান সচিব স্তরের আধিকারিকরাও মহকুমায় গিয়ে সরাসরি এই কাজগুলি পর্যবেক্ষণ করবেন। এই প্রশাসনিক কড়া নজরদারি প্রকল্পের সফল রূপায়ণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
রাজ্য সরকারের এই নতুন উদ্যোগ সাধারণ মানুষের কাছে কতটা পৌঁছায় এবং স্থানীয় সমস্যা সমাধানে কতটা কার্যকর হয়, সেটাই এখন দেখার বিষয়।