‘আমরা এখন ১২টি রাজ্যে ডিম পাঠাই!’ কেন বাড়ছে ডিমের দাম? ‘আসল কারণ’ জানালেন মমতা

শীতকাল আসার আগেই মধ্যবিত্ত বাঙালির ‘সস্তার প্রোটিন’ ডিমের দাম নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। খুচরো বাজারে প্রতি পিস ডিমের দাম ঠেকেছে ৮ টাকা বা কোথাও তারও বেশি। ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পাওয়ায় এমন উর্ধ্বগতি আগে দেখা যায়নি।

এই পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার ‘উন্নয়নের পাঁচালি’র মঞ্চ থেকে ডিমের দাম বৃদ্ধি নিয়ে সরাসরি মুখ খুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি অভিযোগ করেন, ডিমের দাম বাড়ার মূল কারণ ভিনরাজ্য থেকে আসা মুরগির খাবারের (ফিড) অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি।

‘ফিডের দাম কারা বাড়াচ্ছে?’ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “যাঁরা ডিম নিয়ে বড় বড় কথা বলছেন, তাঁদের বলি; আমরা এখন ১২টি রাজ্যে ডিম সরবরাহ করি। ফিডের দাম প্রতিবছর ১২% করে কারা বাড়াচ্ছেন? গিয়ে নিজের নেতাদের জিজ্ঞাসা করুন।”

তিনি আরও বলেন, রাজ্য সরকার ভুট্টা এবং অন্যান্য শস্য চাষ বাড়িয়ে ফিডের জোগান ঠিক রাখার চেষ্টা করছে। “কিন্তু আপনারা দাম বাড়িয়েই যাচ্ছেন। বাইরে দাঁড়িয়ে উল্টোপাল্টা কথা বলছেন, সোশ্যাল নেটওয়ার্কে কিছু টিম বানিয়ে প্রচার চালাচ্ছেন। মিথ্যে কথা বলবেন না,”—এই বলে তিনি বিরোধীদের আক্রমণ করেন।

উৎপাদন খরচ বৃদ্ধির অভিযোগ: পাইকারি ও খুচরো বাজারের অঙ্কেও দামের ফারাক স্পষ্ট। পোলট্রি ফেডারেশনের দাবি, পাইকারি বাজারে প্রতি পিস ডিমের দাম ৬ টাকা ৮০ পয়সা হলেও খুচরো বিক্রেতারা অতিরিক্ত দাম নিচ্ছেন।

পশ্চিম মেদিনীপুরের মতো রাজ্যের প্রধান ডিম উৎপাদনকারী জেলাগুলির পোলট্রি ফার্ম মালিকরাও মুরগির খাবারের দাম বৃদ্ধির অভিযোগ তুলেছেন। পোলট্রি ব্যবসায়ীদের মতে, কেজি প্রতি মুরগির খাবারের দাম ৩ টাকা থেকে ১০ টাকা পর্যন্তও বেড়ে গিয়েছে। ফলে ডিম প্রতি উৎপাদনের খরচও ৭৫ থেকে ৮০ পয়সা বেড়ে গিয়েছে।

উৎপাদনকারীরা আরও জানাচ্ছেন, ডিম উৎপাদনকারী মুরগির অন্যতম খাবার বাদামের খোল, যা মূলত গুজরাত ও রাজস্থান থেকে আসে, সেগুলিরও দাম বেড়েছে। মহারাষ্ট্রে বন্যার কারণেও খাবারের দাম বাড়তে পারে বলে মত ওয়াকিবহাল মহলের। সব মিলিয়ে ডিমের দাম বৃদ্ধি এখন শুধু অর্থনৈতিক নয়, রাজনৈতিক ইস্যুও হয়ে উঠেছে।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy