দীর্ঘদিনের জঞ্জাল সমস্যার সমাধান হতে চলেছে উত্তর ২৪ পরগনার পানিহাটি পুর এলাকায়। পুর এলাকার জঞ্জাল বহনের ক্ষমতা হারানো এবং পরিবেশ আদালতের নির্দেশে পুরাতন ডাম্পিং গ্রাউন্ডে জঞ্জাল ফেলা বন্ধ হওয়ায় যে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছিল, এবার তা কাটতে চলেছে। কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ের ধারে ১৫ বিঘা জমিতে নতুন ডাম্পিং গ্রাউন্ড এবং একাধিক বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণের প্রকল্প হাতে নিচ্ছে পুরসভা।
পুরসভার চেয়ারম্যান সোমনাথ দে জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই দুটি খাতে কমবেশি তিন কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে এবং পাঁচিল তোলার কাজও শুরু হয়েছে।
দীর্ঘদিনের হাহাকার ও মুশকিল আসান
গত কয়েক বছর ধরেই পানিহাটির ডাম্পিং গ্রাউন্ড তার ক্ষমতা হারানোয় রাস্তাঘাট ও অলিগলি ভরে উঠেছিল যথেচ্ছ ময়লা-আবর্জনায়। কিছুটা ময়লা ডাম্পার করে ধাপায় ফেলা হলেও, পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যাচ্ছিল না। এর আগে রামচন্দ্রপুর ও মহিষপোতা এলাকায় নিজস্ব জায়গা থাকা সত্ত্বেও স্থানীয়দের প্রবল বাধার মুখে জঞ্জাল ফেলা সম্ভব হয়নি।
জ্বলন্ত এই সমস্যা সমাধানে চেয়ারম্যান সোমনাথ দে সরাসরি পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকে বিষয়টি জানান। তাঁর নেতৃত্বেই উচ্চপর্যায়ের বৈঠক হয় এবং সমস্যার মুশকিল আসান হয়।
জমি হস্তান্তর ও আধুনিক পরিকল্পনা
পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ের ধারে মুরাগাছায় বিলকান্দা-১ পঞ্চায়েতের ১৫ বিঘা জমি ছিল। আলোচনার মাধ্যমে সেই জমি ডাম্পিং গ্রাউন্ড করার জন্য পানিহাটি পুরসভাকে দেওয়া হয়েছে। এর বিনিময়ে, মহিষপোতার জমি পঞ্চায়েত পেয়েছে ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট করার জন্য।
পানিহাটির চেয়ারম্যান সোমনাথ দে বলেন, “দু’টি খাতে টাকা এসেছে। একটি জমির বাউন্ডারি ওয়াল তৈরির জন্য, অন্যটি ডাম্পিং গ্রাউন্ডের পরিকাঠামো তৈরির জন্য।”
নতুন প্রকল্পের মাধ্যমে জঞ্জাল সমস্যার আমূল পরিবর্তন আনার পরিকল্পনা করেছে পুরসভা। এখানে—
পচনশীল বর্জ্য থেকে জৈব সার তৈরি হবে।
অপচনশীল বর্জ্য থেকে ‘সবুজ জ্বালানি’ তৈরি হবে।
এছাড়াও, রামচন্দ্রপুর গ্রাউন্ডে প্লাস্টিক বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণের কাজও শুরু করা হবে বলে জানিয়েছেন চেয়ারম্যান। তিনি আশাবাদী, এবার ‘জঞ্জাল মুক্ত শহর’ হবে পানিহাটি এবং বর্ষার পর কাজের গতি আরও বাড়বে।