কলকাতা। মানবতাবিরোধী অপরাধে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার রায়ের পর সারা বিশ্বে যে তোলপাড় শুরু হয়েছে, তার মধ্যেই মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার এক বড় ঘোষণা করেছে। সরকারের মতে, হাসিনার বক্তব্য সমাজে হিংসায় প্ররোচনা এবং সামাজিক সম্প্রীতি নষ্ট করতে পারে। তাই দণ্ডিত আসামিদের কোনও বিবৃতি গণমাধ্যমে প্রকাশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
সোমবারই রাষ্ট্রপুঞ্জ এই বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল, যেখানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী হাসিনা ও তাঁর জমানার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের অনুপস্থিতিতে বিচার শেষ করে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেওয়া হয়। মঙ্গলবার আরও কয়েকটি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন এই প্রক্রিয়া নিয়ে সরব হয়। আন্তর্জাতিক মহলে এই চাপের মধ্যেই ইউনূস সরকারের এই বিশেষ ঘোষণা বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।
কী বলা হয়েছে প্রশাসনে?
সদ্য প্রকাশ্যে আসা বিবৃতিতে স্পষ্ট বলা হয়েছে, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত মুজিবকন্যার কোনও বক্তব্য বা বিবৃতি যেন দেশের কোনও গণমাধ্যমে প্রকাশ না করা হয়।
প্রশাসনের যুক্তি অনুযায়ী, অপরাধী এবং পলাতক হাসিনার বক্তব্য হিংসায় প্ররোচনা দিতে পারে। এই বক্তব্য ছড়িয়ে পড়লে অপরাধমূলক কাজকর্ম বৃদ্ধি পাওয়ার পাশাপাশি বাংলাদেশের সামাজিক সম্প্রীতি নষ্ট হতে পারে। এই সিদ্ধান্তকে অনেকে ‘এক ধরনের ফতোয়া’-র সমতুল মনে করছেন।
ফাঁসির মঞ্চ নিয়ে জল্পনা:
অন্যদিকে, সংবাদপত্রের খবর অনুযায়ী, গাজীপুরে মহিলাদের জন্য একটি পৃথক কারাগার তৈরি করা হলেও, সেখানে কোনও ফাঁসির মঞ্চ নেই। এই প্রশ্নের জবাবে প্রাক্তন কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জাকির হাসান জানিয়েছেন যে, আগে কোনও মহিলার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়নি। তাই ধরে নেওয়া হয়েছিল যে ভবিষ্যতে মহিলাদের ক্ষেত্রে এমনটা ঘটবে না, ফলে মহিলা কারাগারে ফাঁসির মঞ্চ তৈরি হয়নি। তাঁর মতে, বাংলাদেশে রাষ্ট্রপতির কাছে পৌঁছানোর পর বেশিরভাগ মৃত্যুদণ্ডই যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে রূপান্তরিত হয়।