আজীবন জয়েন্টে ব্যথা, হতে পারে শারীরিক অক্ষমতা! বিশ্বে শীর্ষে ভারত, Chikungunya-র দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব নিয়ে মারাত্মক সতর্কবার্তা

মশাবাহিত সংক্রমণ চিকুনগুনিয়া (Chikungunya) আগামী দিনে আরও ভয়ঙ্কর রূপ নিতে চলেছে। ব্রিটিশ মেডিক্যাল জার্নাল BMJ Global Health-এ প্রকাশিত এক আন্তর্জাতিক গবেষণায় আশঙ্কাজনক পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে যে, প্রতি বছর অন্তত ৫১ লক্ষ ভারতীয় এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছেন।

লন্ডন স্কুল অব হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিক্যাল মেডিসিন-এর গবেষকদের নেতৃত্বে করা এই সমীক্ষা বলছে, চিকুনগুনিয়া দ্বারা বিশ্বে সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত দেশ হতে পারে ভারত। আক্রান্তের সংখ্যা অনুযায়ী দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ব্রাজিল এবং তৃতীয় স্থানে ইন্দোনেশিয়া। রিপোর্ট অনুযায়ী, শুধুমাত্র ভারত ও ব্রাজিল মিলেই গোটা বিশ্বের স্বাস্থ্যব্যবস্থার উপর পড়া চিকুনগুনিয়ার বোঝার প্রায় ৪৮ শতাংশ তৈরি করছে।

চিকুনগুনিয়ার লুকানো ভয় ও দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব:
গবেষকরা জানিয়েছেন, চিকুনগুনিয়ার প্রকৃত ভয় এর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাবে লুকিয়ে রয়েছে। আক্রান্তদের প্রায় অর্ধেকের ক্ষেত্রেই আজীবন জয়েন্টে ব্যথা বা শারীরিক অক্ষমতা থেকে যেতে পারে।

বয়সের বিচারে সবচেয়ে বেশি ভুক্তভোগী: ৪০ থেকে ৬০ বছরের মানুষ।

মৃত্যুর ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি: শিশু (১০ বছরের নীচে) ও প্রবীণদের (৮০ বছরের ঊর্ধ্বে)।

গবেষকদের দাবি, এই প্রথম কোনও মডেল-ভিত্তিক গবেষণায় উঠে এল যে, প্রতিবছর বিশ্বজুড়ে প্রায় ১.৪৪ কোটি মানুষ এই ভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারেন। আগের অনুমানগুলি নজরদারি রিপোর্টের উপর নির্ভর করত, যা বাস্তব পরিস্থিতির চেয়ে অনেক কম দেখাত।

টিকা ও প্রতিরোধই একমাত্র ভরসা
নাগাসাকি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক হাইওলিম কাং সতর্ক করেছেন, চিকুনগুনিয়া শুধু গ্রীষ্মমণ্ডলীয় বা উপ-গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চলে সীমাবদ্ধ থাকবে বলে এতদিন ধারণা ছিল, কিন্তু এখন ঝুঁকি আরও বিস্তৃত।

বিশেষজ্ঞরা আরও জানিয়েছেন, চিকুনগুনিয়ার এখনও নির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই। চিকিৎসা বলতে কেবল এর উপসর্গ নিয়ন্ত্রণ করা। তবে যুক্তরাষ্ট্র-সহ কয়েকটি দেশে দু’টি প্রতিষেধক ভ্যাকসিন ইতিমধ্যেই অনুমোদিত হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, শিশু, প্রবীণ এবং ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলের জনগোষ্ঠীর জন্য টিকাকরণই হতে পারে ভবিষ্যতের একমাত্র ভরসা।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy